ঢাকাশনিবার , ৭ আগস্ট ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টিকার জন্য নিবন্ধনের টাকা নেওয়ায় ৩ স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যাহার

প্রতিবেদক
সিএনএ

আগস্ট ৭, ২০২১ ৯:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সারা দেশে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা নিবন্ধনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্বাস্থ্য সহকারী নিজেই দোকান খুলে বসেছেন। ছেলের কম্পিউটার এনে ৫০ টাকা করে জনপ্রতি নিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করে দিয়েছেন।

এমন অভিযোগে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর স্বাস্থ্য সহকারী সুনীল চন্দ্র দেবসহ তিনজনকে কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করা হয়। শনিবার (৭ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে তাদের পরিবর্তে টিকাদান কেন্দ্রে নতুন তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রত্যাহারকৃত অন্যরা হলেন- গাজীনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নুরজাহান বেগম ও স্থানীয় পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ সহকারী চন্দনা রাণী নাথ।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত সোম, মঙ্গল ও বুধবার স্বাস্থ্য সহকারী সুনীল চন্দ্র দেবনাথ গাজীনগর কমিউনিটি ক্লিনিক ও রমজান আলী পাটওয়ারী বাড়ির ইপিআই টিকাকেন্দ্রে বসে জনগণের নিবন্ধন করে দেন। সেখানে তিনি জনপ্রতি ৫০ টাকা করে কম্পিউটার খরচ নেন। এরমধ্যে যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের নিবন্ধন করা হয়নি। এতে তাকে ক্লিনিকের সিএইচসিপি নুরজাহান ও পরিবার কল্যাণ সহকারী চন্দনা রাণী নাথ সহযোগিতা করেছেন।

এমন অভিযোগে বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও বাহারুল আলমকে প্রধান করে তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। শনিবার বেলা ১১টার দিকে অভিযুক্ত তিনজনকে কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তাদের পরিবর্তে নতুন তিনজনকে দায়িত্ব দেয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা সিভিল সার্জন আবদুল গফ্ফার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিবন্ধনে টাকা আদায়ের ঘটনায় দুজন স্বাস্থ্য সহকারীকে কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি একজন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের। কর্তৃপক্ষ তাকেও প্রত্যাহার করেছে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বিনামূল্যে নিবন্ধন করানোর জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া ছিল।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লামচরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এনআইডি কার্ড নিয়ে গেলে দায়িতপ্রাপ্ত কাউন্সিলর দুটি দোকান দেখিয়ে দেন। সেখানে গিয়ে টিকা নিবন্ধনের জন্য ও কার্ড ডাউনলোড করে প্রিন্টের জন্য ৪০-৫০ টাকা করে গুণতে হয়েছে সবাইকে।

স্বাস্থ্য সহকারী সুনিল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, টিকার জন্য নিবন্ধনের কোন দায়িত্ব আমার ছিল না। তবুও ছেলের কম্পিউটার এনে নিবন্ধন করে দিয়েছি। এরজন্য এনআইডি নম্বর খাতায় লিখে ৫০ টাকা করে কম্পিউটার খরচ নিয়েছি।

কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নুরজাহান বেগম বলেন, টাকা নিয়ে নিবন্ধনের ঘটনাটির সঙ্গে আমি জড়িত নই।

অভিযুক্ত পরিবার কল্যাণ সহকারী চন্দনা রানী নাথ বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী সুনীলের অনুরোধে ইপিআই কেন্দ্রে নিবন্ধনের জন্য আসা ব্যক্তিদের এনআইডি নম্বরগুলো আমি খাতায় লিখে দিয়েছি। তিনিই নিজ দায়িত্বে ৫০ টাকা করে নিয়েছেন। টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার বাহারুল আলম বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশে অভিযুক্তদের প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায় আমাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। তারা দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, রবিবার অভিযোগের তদন্ত শেষ হবে। তখন প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com