ঢাকাশুক্রবার , ২ জুলাই ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মসজিদে আসা মুসল্লিদের মুখে মাস্ক ছিল না

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুলাই ২, ২০২১ ৬:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

করোনার ভয়াবহ সংক্রমণে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও এখনও সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। শুক্রবার (২ জুলাই) মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে মুসল্লিদের মধ্যে উদাসীনতা দেখা গেছে। অনেক মুসল্লির মুখে দেখা যায়নি মাস্ক।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, মহানগরীর অধিকাংশ মসজিদে জুমার নামাজে আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। বেশিরভাগ মসজিদে সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। ছিল না স্যানিটাইজারের কোনও ব্যবস্থা। অধিকাংশ মুসল্লির মুখে মাস্কও ছিল না।

মহানগরীর চরপাড়া কফি কাপ মসজিদে বেলাল (রা.) এর খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. আনোয়ার হোসাইন জানান, প্রতিটি জুমার নামাজের বয়ানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে আসার জন্য মুসল্লিদের আহ্বান করা হয়। কিন্তু মুসল্লিরা তা পালন করছেন না। এ বিষয়ে আমরাতো মুসল্লিদের ওপর জোর-জবরদস্তি করতে পারি না।

মময়মনসিংহ বড় মসজিদের প্রধান খতিব মাওলানা মো. আব্দুল হক বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে আসা উচিত। এ বিষয়ে তিনি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সহায়তা চান।

জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য সরকারের নির্দেশনা মসজিদ কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে মুসল্লিরা যাবেন। তবে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখবে বলে জানান তিনি।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কঠোর লকডাউনে আইনশৃখলা বাহিনীর তৎপরতা ও বৃষ্টির কারণে জুমার নামাজে নারায়ণগঞ্জের মসজিদগুলোতে তুলনামূলক কম মুসল্লি ছিল। তবে মসজিদের ভেতরে কোনও ফাঁকা না রেখে মুসল্লিরা গায়ে গায়ে লেগেই নামাজ আদায় করেন। তবে বেশিরভাগ মুসল্লির মুখে মাস্ক ছিল। তবে অনেককে মাস্ক না পরেই মসজিদে উপস্থিত হতে দেখা গেছে।

যদিও সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ইমামরা মসজিদে আসার আগে বাসা থেকে ওজু করে, জায়নামাজ ও মাস্ক পরে মসজিদে আসার জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন।

নগরীর মাসদাইর বাজার সংলগ্ন বায়তুল আমান মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের সামনে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই পানি ভেঙে অনেক মুসল্লিকে মসজিদে আসতে দেখা গেছে। তবে অন্য যেকোনও শুক্রবারে তুলনা আজ মুসল্লির সংখ্যা অনেক কম ছিল।

মসজিদে আসা মুসল্লি মো. আব্দুল কাদির মিয়া জানান, সাতদিনের কঠোর লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। রাস্তায় বিনা কারণে বের হলে জেরাসহ জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া সংক্রমণ এড়াতেও নামাজে মুসল্লি কমে এসেছে। প্রতি শুক্রবার মসজিদের তিনটি ফ্লোর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু আজ দুই ফ্লোরই পূর্ণ হয়নি।

বরিশালে জুমার নামাজে অংশ নিয়ে করোনা বিষয়ক প্রচারণা চালান পুলিশ সদস্যরা
বরিশালে জুমার নামাজে অংশ নিয়ে করোনা বিষয়ক প্রচারণা চালান পুলিশ সদস্যরা
বরিশাল প্রতিনিধি জানান, নগরী থেকে শুরু করে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের মসজিদগুলোতে জুমার নামাজের আগে করোনা মহামারি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) ও জেলা পুলিশ। ‍

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএমপি কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান ও পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। তারা জানান, সদর ‍উপজেলার সাইবের হাট, টুঙ্গিবাড়িয়া, চাঁদপুরাসহ ১০টি উপজেলার ৮৭টি ইউনিয়নের এক হাজার মসজিদে বিএমপি ও জেলা পুলিশের প্রতিনিধিরা জুমার নামাজে অংশ নিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন।

পুলিশ প্রতিনিধিরা মহামারি সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরার ‍ওপর জোর দেন। সদরের চাঁদপুরা তালুকদার বাড়ি মসজিদের ‍ইমাম মোখলেছুর রহমান বাবু বলেন, জুমার নামাজের আগেই চার জন পুলিশ সদস্য মসজিদে আসেন। খুতবা শেষে তারা অনুমতি নিয়ে মুসুল্লিদের ‍লকডাউন ও করোনা মহামারি নিয়ে সচেতন করেন। পরে তারা জুমার নামাজে অংশ নেন।

খুলনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, খুলনা জেলা প্রশাসন থেকে করোনার সংক্রমণরোধে মসজিদে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি। ইমামরা বললেও বিষয়টি শোনেননি মুসল্লিরা।

খুলনার বৃহৎ দারুল উলুম মসজিদের ইমাম মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতি ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিদের মাস্ক পরে মসজিদে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ মানলেও বেশির ভাগই মানছেন না।

নাম উল্লেখ না করার অনুরোধ জানিয়ে গোবরচাকা মেহমানিয়া মসজিদের ইমাম বলেন, মাস্ক না পরে মসজিদে না ঢোকার অনুরোধ জানিয়ে গেটে বিলবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক ওয়াক্ত পর সেটি কারও মনে থাকে না। অল্প কিছু লোক ছাড়া অন্যরা মাস্ক ছাড়াই মসজিদে আসেন।

খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইউসুফ আলী বলেন, মসজিদে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে।

গত ২৮ জুন করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা ও মহানগর কমিটির সভায় খুলনায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মসজিদগুলোতে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক, চায়ের দোকান বন্ধ রাখা, হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীর সঙ্গে দেখা করতে না আসাসহ কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়।

এদিকে নগরীর বায়তুল মোকাররম, ‍এবায়দুল্লাহ মসিজদে জুমার নামাজ ‍আদায়কারী ‍একাধিক মুসল্লি জানান, নামাজে সবাই মাস্ক পরে আলেও, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com