খুরুশকুলে প্লট বরাদ্দে হরিলুট, সার্ভেয়ার থেকে কোটিপতি সুমন।
পর্ব-১
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বিমান বন্দরকে আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর করার ঘোষনা দিলে বিমান বন্দরকে সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন সরকার। তখন উচ্ছেদের কবলে পড়ে কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নাম্বার ওর্য়াডের ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্টান বাহারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বালিকা মাদ্রাসা পাড়া ও ঝাউ বাগান পাড়ার প্রায় ৪২২ টি ভূমিহীন পরিবার। মানবিক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উচ্ছেদের কবলে পড়া প্রায় ৪২২ টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে বরাদ্দ করেন নগদ টাকা ও পূর্ণবাসনের জন্য খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকায় নির্ধারণ করেন সরকারী খাস জমি। মানবিক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কক্সবাজারের মান্যবর জেলা প্রশাসক (ডি.সি) মহোদয়ের আদেশক্রমে কক্সবাজার সদর এসিল্যান্ড মহোদয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকায় শুরু করেন প্লট বরাদ্দ। সেই প্লট বরাদ্দে সার্ভেয়ার হিসাবে কাজ করেন কথিত সার্ভেয়ার সুমন। উচ্ছেদের কবলে পড়া প্রায় ৪২২ টি ভূমিহীন পরিবারের প্লট বরাদ্দের কাজ করতে গিয়ে সার্ভেয়ার সুমন গড়ে তুলে একটি সিন্ডিকেট। কক্সবাজার সদর এসিল্যান্ড মহোদয়ের অজান্তে সার্ভেয়ার সুমন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দে শুরু করে হরিলুট। প্লট বিক্রি করে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা, বনে যায় কোটি পতি। উচ্ছেদের কবলে পড়া প্লট বরাদ্দ পাওয়া লোকজনসহ খুরুশকুল পূর্ব হামজার এলাকার স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সার্ভেয়ার সুমন ও সদর এসিল্যান্ড অফিসে কর্মরত সাহাব উদ্দিনের ছোটভাই সদর এসিল্যান্ড অফিসের দালাল নাছির, দালাল আলম সহ ৮/১০ জনের একটি সিন্ডিকেট আছে। সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারী খাস জমি বিক্রি করে থাকে। সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির সিন্ডিকেট ইতিমধ্যে স্থানীয় জনৈক আজিমের ঘোনায় খুরুশকুল টাইম বাজার এলাকার জনৈক ইদ্রিসকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ৫ গন্ডার একটি প্লট, খুরুশকুল টাইম বাজার এলাকার জনৈক জালাল উদ্দিনকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ গন্ডার একটি প্লট, খুরুশকুল লামাজী পাড়া এলাকার জনৈক নেজাম উদ্দিনকে ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ২ গন্ডার একটি প্লট, সিএনজি ড্রাইভার জাগিরের ঘরের সামনে খুরুশকুল মামুন পাড়া এলাকার জনৈক ব্যাক্তিকে ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৩ গন্ডার একটি প্লট, কক্সবাজার বাহারছড়া এলাকার জনৈক সবুজকে ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৪ গন্ডার একটি প্লট, পূর্ব হামজার ডেইল এলাকার বশিরের স্ত্রী রাবেয়া বেগম @ রাবি কে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ৪ গন্ডার একটি প্লট, রাবেয়া বেগম @ রাবির মেয়ে খুন্নু বেগমকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ১ গন্ডার একটি প্লট, পালংখালী এলাকার জনৈক ব্যাক্তিকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ গন্ডার একটি প্লট, খুরুশকুল কুলিয়া পাড়া এলাকার জনৈক সিএনজি ড্রাইভারকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ গন্ডার একটি প্লট, স্থানীয় বামনের কাটা এলাকায় খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকার জনৈক বশিরের ছেলে আব্বুইয়া সহ ৭/৮ জনকে ৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ১০ গন্ডার একটি প্লট, পূর্ব পার্শ্বে পাহাড়ের চুড়য়া টুইন টাওয়ার নামক স্থানটি খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকার জনৈক সর্দার শফিকে ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৮ গন্ডার একটি প্লট, একই স্থানে সার্ভেয়ার সুমনের ড্রাইভার খুরুশকুল পাল পাড়া এলাকার জনৈক উৎপলকে দেয় ২ গন্ডার একটি প্লট, একই স্থানে সার্ভেয়ার সুমনের বন্ধু জনৈক নজরুলকে দেয় ২ গন্ডার একটি প্লট এবং সাপের গারা নামক স্থানে কক্সবাজার গাড়ীর মাঠ এলাকার জনৈক মোঃ আলী কে ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৩ গন্ডার একটি প্লট ও খুরুশকুল ০৬ নাম্বার ওর্য়াডের বর্তমান মেম্বার মোঃ শফিকে ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৫ গন্ডার একটি প্লট, উল্লেখ্য যে, সরকার ঘোষিত চলমান লক ডাউনেও কর্তব্যরত সদর এসিল্যান্ড মহোদয়ের অনুপস্থিতে পূর্ব হামজার ডেইল এলাকার মকতুলের ঘোনায় ভোগ দখলে থাকা স্থানীয়দের মামলার ভয় দেখিয়ে প্লট বিক্রি করে সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির। এভাবে সরকারী খাস জমি প্লট হিসাবে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সুমন ও নাছির সিন্ডিকেট। সরকারী খাস জমি বিক্রি করতে গিয়ে স্থানীয় কয়েকজনকে দিয়ে ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতঃ জমির দখল বুঝাইয়া দেই বলিয়া স্থানীয়ভাবে জানা যায়। খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকায় দীর্ঘ ২০/৩০ বছর ধরে বসবাসরত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছিরের অত্যাচারে প্রায় অতিষ্ট স্থানীয়রা। সরকারী খাস জমিতে বসবাস করতে হলে তাদেরকে টাকা দিতে হবে অন্যতায় এসিল্যান্ড এনে ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে দিবে বলে হুমকী দেয় সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির সিন্ডিকেটের সদস্যরা। প্লট হরিলুটের বিষয়ে সার্ভেয়ার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও সে রিসিভ করে নাই। বর্তমানে খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয়দের মধ্যে একটাই প্রশ্ন সরকারী খাস জমির মালিক সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির নাকি সরকার। সার্ভেয়ার সুমন ও দালাল নাছির সিন্ডিকের হাত থেকে বাচঁতে চাই স্থানীয়রা। প্লট বরাদ্দে হরিলুটের বিষয়ে জেলা প্রশাসক(ডি.সি) মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাবাসি।