ঢাকামঙ্গলবার , ২৯ জুন ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিবাহ বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক ও বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় খুন হন জেলেখা

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুন ২৯, ২০২১ ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

অবশেষে পাট ক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া সেই অজ্ঞাত নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে এবং খুনিসহ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) লাশ উদ্ধারের পর তার পরিচয় মিলে। ওই নারীর নাম জেলেখা (২৪)। তিনি সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। ওইদিনই অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা রুজু করে নিহতের মা জরিনা বেগম।

পুলিশ জানায় গ্রেফতার আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বিবাহ বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক ও বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ার ঘটনায় প্রেমিকাকে হত্যার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা হলেন গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা পাঙ্গাটারি এলাকার দীনেশ চন্দ্র বর্মণের ছেলে বিধান চন্দ্র বর্মণ (২৬) ও একই এলাকার সুদর্শন বর্মণের ছেলে বিধানের সহযোগী সুকুমার চন্দ্র বর্মণ ওরফে হরতাল (২১)।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) আতিকুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি শাহা আলম।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকালে গোকুন্ডা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রতিপুর বসুনীয়া পাড়ার মমিনুল ইসলামের পাটক্ষেত থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়না তদন্ত করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহত নারী জেলেখার প্রেমিক বিধান চন্দ্র বর্মণকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যমতে সহযোগী সুকুমার চন্দ্র বর্মণকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, দিনবন্ধু নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বিধান জেলেখার মোবাইলফোন নম্বর পায়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ১৮ জুন (শুক্রবার) স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি পাটিয়ে ২১ জুন (সোমবার) রাতে জেলেখাকে বাড়িতে ডেকে আনে বিধান। পরদিন রাতেও ডেকে এনে একসঙ্গে রাত কাটায় তারা। কিন্তু জেলেখার দাবি ছিল, ভোরে তাকে বিয়ে করে ঢাকায় গিয়ে সংসার করতে হবে। সে মতে ভোরে বিধানকে ঘুম থেকে তুলে বিয়ের চাপ দিলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জেলেখা চিৎকার করে লোকজন জড়ো করার হুমকি দেয়। উত্তেজিত হয়ে বিধান কাঠ দিয়ে মাথায় মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। পরে দা দিয়ে কুপিয়ে গলা চেপে হত্যা করে জেলেখার লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে বিধান। পরে ওইদিন দিবাগত রাতে (২৩ জুন) বিধান ও তার বন্ধু সুকুমার লাশ নিয়ে পাটক্ষেতে রেখে আসে।

রবিউল ইসলাম আরও বলেন, আসামি বিধান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নিজের দোষ স্বীকার করে বলেছে ‘আমি জেলেখাকে হত্যা করেছি, এটা ঠিক করি নাই’।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা জামাল ও ওসি শাহা আলমের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ক্লুলেস মামলাটির ক্লু উদ্ধার এবং আসামি গ্রেফতার করেছি। আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যা ও লাশ গুমের কথা স্বীকার করে আসামি বিধান ও সুকুমার জবানবন্দি দিয়েছেন। শিগগিরই এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com