প্রায় পাঁচ মাস আগে (২৭ মার্চ) নিজ কক্ষে এক ক্যাবল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। হত্যার পরদিনই ‘পরকীয়া প্রেমিক’র সঙ্গে মিলে স্বামী হত্যার পর বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন স্ত্রী। সেখানে স্বামীকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে কান্নায় ভেঙেও পড়তে দেখা যায় তাকে। তবে হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ মাস পর এর রহস্য ভেদ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি জানিয়েছে, নিহতের স্ত্রী ও তার প্রেমিক মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বুধবার (২৫ আগস্ট) পিবিআই-এর উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওই ক্যাবল ব্যবসায়ীর নাম ইলিম সরকার (৪২)। তিনি আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার ফজল সরকারের ছেলে ও মহল্লায় ক্যাবল ব্যবসা করতেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা হত্যাকাণ্ডের পরদিন আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় সোমবার (২৩ আগস্ট) রাতে আশুলিয়া থেকে স্ত্রী ক্যামেলি বেগম ও প্রেমিক পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার দুইজনকে আজ আদালতে পাঠালে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠায়। এছাড়াও ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে বলেও জানান পিবিআই-এর এসআই সালেহ ইমরান।
পিবিআই সূত্র জানায়, ইলিম-ক্যামেলি ১৪ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তাদের ১০ বছরের একটি ছেলে ও সাত বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এদিকে ২০১৯ সালে বিদ্যুতের মিটার লাগানোর সুবাদে ক্যামেলির সঙ্গে পিন্টুর পরিচয় হয়। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ক্যামেলির স্বামী বিষয়টি জেনে গেলে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইলিম সরকার বিষয়টি পরিবারের কাছে প্রকাশ করার হুমকিও দেন। এতে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ মার্চ রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সকালে প্রেমিক পিন্টুসহ কয়েকজন ভাড়াটে খুনি ভেতরে প্রবেশ তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় কক্ষের দরজায় পাহারায় ছিলেন নিহতের স্ত্রী।
এদিকে, ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ক্যাবল ব্যবসা নিয়ে কোন্দলের যেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রচারণা করতে থাকেন ক্যামেলি বেগম। এমনকি ২৮ নিজেই সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিচারের দাবি জানান।