ঢাকামঙ্গলবার , ১৫ জুন ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সরকারি অফিস আদালত খোলা নাকি বন্ধ জনমনে প্রশ্ন

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুন ১৫, ২০২১ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চলছে সরকারের প্রশাসনের শীর্ষ কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়। অনুষ্ঠিত হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠক। নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভাও। জেলা পর্যায়ে কাজ চলছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসে। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরও। বেলা ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মে লেনদেন চলছে ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের শেয়ার বাজার। চলছে সরকারি বেসরকারি বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। অথচ করোনা মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ১২ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে আদেশ জারি করেছে, যা এখনও বহাল রয়েছে। এমন প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- সরকারি অফিস আদালত তাহলে খোলা নাকি বন্ধ?

জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্রীয়ভাবে চলমান লকডাউন বা বিধিনিষেধের মেয়াদ আর বাড়াতে চায় না সরকার। এখন থেকে করোনা মহামারির সংক্রমণ যে এলাকায় পাওয়া যাবে সেসব এলাকায় পুরোপুরি ব্লক করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবারের (১৪ জুন) অনুষ্ঠিত সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তিনি এ নির্দেশনার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, দিনাজপুরে লকডাউন চলছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জেও লকডাউন দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সংক্রমণের হার নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ক্যাবিনেট সচিব। এখন থেকে এভাবেই চলবে বলে জানিয়েছেনও তিনি। ক্যাবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন – তাহলে সরকারি অফিস আদালত খোলা না বন্ধ? এভাবে আর চলবে কতকাল ?

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও দুদিন রয়েছে। ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। তাই আলোচনা বা বিবেচনার সুযোগও রয়েছে। দুদিন পরেই এ বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে।

সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জরুরি দফতর বা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি অফিস আদালত বন্ধ থাকার কথা থাকলেও সচিবালয়ের সকল মন্ত্রণালয়ের সকল দফতরই তো খোলা রয়েছে। তাহলে বিষয়টি কী দাঁড়ালো ? জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, ‘সকল কর্মকর্তা আসছেন না। আমরা তো ৫০ শতাংশ জনবল দিয়ে কাজ করছি। অপেক্ষা করুন, ১৬ তারিখের আগেই বিষয়টি ফয়সালা হবে।’

জানতে চাইলে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোশরফ হোসেন জানিয়েছেন, করোনার এমন পরিস্থিতিতে আমরা তো সরকারি নির্দেশনা মেনে কাজ করছি। দফতরও খোলা রয়েছে। মানুষজন সেবা নিতে আসছেন। আমরাও সেবা দিচ্ছি। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে। আগামী ২১ জুন উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। তাই ইউএনও অফিস বন্ধ রাখার তো কোনও সুযোগ নাই। এর বাইরেও সরকারের জরুরি নির্দেশনা বাস্তবায়নেও কাজ করতে হচ্ছে।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহম্মদ জাকী জানিয়েছেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় লকডাউন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করছি। অফিস বন্ধ রাখার তো প্রশ্নই ওঠে না। এছাড়া জেলা প্রশাসকের দফতরে সাধারণ মানুষের অনেক সেবা নেওয়ার সুযোগ আছে। সেসব সেবা নিতে নাগরিকরা আসছেন, আমরাও সেবা দিচ্ছি।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের দফতরে কাজ চলছে। নাগরিকরা নানা ধরণের জরুরি সেবা নিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত করেনা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এভাবেই শুরু থেকে জেলা প্রশাসকের দফতর খোলা রেখে কাজ করছি। ব্যাংক, হাসপাতাল, রাজস্ব অফিসেও কাজ চলছে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির সংক্রামণ ঠেকাতে গত ১২ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি অফিস আদালত বন্ধ রয়েছে। তবে সচিবালয়ে শুরু থেকেই কাজ চলেছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক, বীমা, বন্দর, রাজস্বসহ বিভিন্ন দফতরে ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া হয়। শুরুর দিকে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও পরবর্তীতে কয়েক ধাপে তাও চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়। চালু করা হয়েছে বিমান ও নৌযানও। তবে কয়েক দফা খোলার তারিখ ঠিক করা হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যা চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত।

সম্পর্কিত পোস্ট