ঢাকাসোমবার , ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লামায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল বিতরণ উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল

প্রতিবেদক
এম, কামরুল হাসান টিপু

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ ১১:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এম, কামরুল হাসান টিপু
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :

“শেখ হাসিনার অবদান – কমিউনিটি ক্লিনিক বাচায় প্রান” , এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন, লক্ষ্য ২কোটি ২০ লাখ শিশু আজ সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ৬-৫৯ মাস বয়সের ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের আওতায় ৬-১১ মাস বয়সের ২৮৭০ শিশু এবং ১২-৫৯ মাস বয়সের ১৭ হাজার ৫’শত শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লামা উপজেলা কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের বহিঃবিভাগে- সাধারণ রোগী, মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা কিশোর কিশোরী কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল বিতরণ উদ্বোধন করা হয়।


জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে প্রধান অতিথি থেকে পরিদর্শন করেন, লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাঈনুদ্দীন মোর্শেদ, লামা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক দিদারুল ইসলাম চৌধুরী, স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এ বি এম শামসুজ্জামান,আবাসিক মেডিকেল অফিসার লামা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স, ডা. মো: শহিদুল ইসলাম, সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস কোম্পানি, ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, মহি উদ্দিন সহ প্রমূখ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মাঝে রাতকানা রোগের হার ছিল ৪.১০ শতাংশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুইবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশে নেমে এসেছে।

আরো জানান, জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অবহতিকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া পৌরসভায় ওয়ার্ড পর্যায়ে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে লজিস্টিকস প্রেরণ করা হয়। উপজেলা ওষুধাগার থেকে ইউনিয়ন ও মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল। লাল রঙের ক্যাসপুল আছে ১৭৫০ আইইউ, আর নীল রঙের ক্যাপসুল আছে ২৮৭০আইইউ। ক্যাম্পেইনের আওতায় কেন্দ্র সংখ্যা প্রায় ৭২টি। স্বাস্থ্যসেবীর সংখ্যা প্রায় ১৪৪টি। আর স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৯০ জন।

লামা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক দিদারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিশুদের ভরাপেটে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। কাঁচি দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মুখ কেটে এর ভিতরে থাকা সবটুকু তরল ওষুধ চিপে খাওয়ানো হবে। জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ৬ মাসের কম বয়সী এবং ৫ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

পরিদর্শনে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল বলেন, রোগীরা যেন ঠিকমতো সেবা পায় সেজন্য ডাক্তার-নার্সদের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো হতে হবে। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে বড় কাজ। করোনার পাশাপাশি ভ্যাকসিন পাওয়া ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। তবে সরকার সেটি ঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে। চিকিৎসকদের পদোন্নতি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আর কোনো জটিলতা থাকবে না। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তার মাধ্যমেই এ জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। আমরা যে কথা বলতে পারছি সেটি বঙ্গবন্ধুর কারণেই। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়তে স্বাধীনতার পর মাত্র তিনটি বছর সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার স্বপ্ন ছিল কেউ গৃহহীন থাকবে না, বিনা চিকিৎসা কেউ মারা যাবে না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান নামক এই বিচ্ছিন্ন জন্মভূমিতে কখনো স্বাধীন দেশ গড়ে উঠতে পারে না। তাই পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন।

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এ উদ্বোধনীতে অতিথিরা ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু তখন জেলে, ওনার শরীর খারাপ। তিনি অনুমতি নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হলেন। কিন্তু তিনি শুধু হাসপাতালে শুয়ে-বসে থাকেননি, ভাষা আন্দোলন বিষয়ে নেতাদের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেই ছাত্ররা আন্দোলনের মাধ্যমে ভাষা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। একটা মহল জাতির পিতার এই ভূমিকা লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অবদান কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। ইতিহাসের সত্যকে কখনো ঢেকে রাখা যায় না।

ডাক্তাররা বলেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দেওয়ার ইতিহাস লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। দেশের সব আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহণ ছিল। তিনি ঐসময় জেলে থেকেও আন্দোলনে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট