ঢাকাশুক্রবার , ৫ জানুয়ারি ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুরুশকুলের পাহাড় কেখো গিয়াস বেপরোয়া, পাহাড় কাটছে দিনে-রাতে!

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ৫, ২০২৪ ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

পাহাড় কেখো গিয়াস বেপরোয়া, পাহাড় কাটছে দিনে-রাতে!

(নিজস্ব প্রতিবেদক)

সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের চিহ্নিত পাহাড় কেখো গিয়াস উদ্দিন দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সে ইতিমধ্যে দিনে-রাতে পাহাড় কেটে সাবাড় করে ফেলেছে কয়েকটি পাহাড়। সে বুক ফুলিয়ে দিনে-রাতে যেভাবে পাহাড় কাটে, দেখে মনে হবে বন বিভাগের সব কর্মকর্তা যেন তার হাতের মুঠোয়। পাহাড় কেখো ডাম্পার মালিক গিয়াস উদ্দিনের কর্মকাণ্ড দেখে বিস্মিত স্থানীয় সচেতন সমাজ। সে ৭নং ওয়ার্ড গাজীর ডেইল এলাকার মৃত গোলাম সুলতানের ছেলে বলে জানা যায়।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল এলাকার পাহাড়তলী নতুন পাড়া মসজিদের সামনে একটি পাহাড় কেটে সমতল করে ফেলেছে পাহাড় কেখো গিয়াস। স্থানীয় মোক্তার আহাম্মদের ঘোনার উত্তর মাথার পাহাড়টি এভাবে কেটেছে দেখলে মনে হবে সে পাহাড়টি সরকার কিংবা বন বিভাগ থেকে নিলামে নিয়েছে। অপ্রতিরোধ্য গিয়াস বর্তমানে স্থানীয় আজিমের ঘোনার পাহাড়টি ও মোক্তার আহাম্মদের ঘোনার দক্ষিণ মাথার পাহাড়টি দিন-রাতে লেবার দিয়ে কেটে ডাম্পার যোগে মাটি নিয়ে যাচ্ছে পাহাড় কেখো গিয়াস। পাহাড় কাটা তার একপ্রকার নেশা হয়ে গেছে। পাহাড় কাটার সময় তার ডাম্পার গাড়ীর চালক ও লেবারদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা গলা উচু করে বলে, “এটা গিয়াস কোম্পানির গাড়ী, কোম্পানির কথা মত আমরা পাহাড় কাটছি। আমরা লাইন ঠিক করে পাহাড় কাটছি, আপনারা সমস্যা কি? আপনার কিছু বলার থাকলে কোম্পানিকে বলেন”।

স্থানীয়রা জানান, ডাম্পার মালিকরা বিট অফিসারকে টাকা দিয়ে পাহাড় কাটছে। একটা ডাম্পার একদিন পাহাড় কাটলে তাকে দিতে হয় ১ হাজার টাকা আর দিনেরাতে কাটলে দিতে হয় ২ হাজার টাকা। আরো জানান, বন বিভাগের উর্ধ্বতন কোন অফিসার, ইউএনও, এসিল্যান্ড ও পরিবেশের লোকজন খুরুশকুলের ঢুকার সাথে সাথে সে ডাম্পার মালিকদের ফোন করে সতর্ক করে দেয় তিনি। এই অসাধু, দূর্নীতিবাজ বিট কর্মকর্তা খুরুশকুলে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে পাহাড় ও বনভূমি নিশ্চিন্ন হয়ে যাবে বলে জানান স্থানীয়রা।

দিনে-রাতে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানার জন্য গিয়াস উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেই ফোন রিসিভ করে বলেন-আমি গিয়াসের ছোটভাই। আমার বড়ভাই দুরে আছে, ১০ মিনিট পরে আমার বড়ভাইকে দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর নাছির উদ্দিন পরিচয়ে একজন কল করে ডকুমেন্ট নিয়ে নিউজ করার অনুরোধ করেন। একপর্যায় প্রতিবেদকের সাথে দেখা করে সমাধানের প্রস্তাব দেন।

প্রকাশ্যে দিনে-রাতে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানার জন্য স্থানীয় ইউপি মেম্বার স্বপন কান্তি দে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাহাড় কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-আমার ওয়ার্ডে ৫/৬টি ডাম্পার পাহাড় কাটে। আমি অনেকবার নিষেধ করেছি, এরা শুনে না। কয়েকদিন আগে গিয়াসের ডাম্পার গাড়ীটি আমার বাড়ীর সামনের ড্রেইনে পড়ে যায়। এতে ড্রেইনটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে। বিষয়টি আমি আমাদের চেয়ারম্যান ও ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করেছি।

এবিষয় জানার জন্য বিট কর্মকর্তা মো: মাসুম মাতবর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- গিয়াস কোম্পানিকে পাহাড়তলী নতুন ঘোনার পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার জন্য দু’মাস আগে আমি বাদী হয়ে মামলা দিছি। স্থানীয় আজিমের ঘোনা ও মোক্তারের ঘোনায় পাহাড় কাটার বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট