নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চতুর্থ রাউন্ডে আরো তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৫৬ জনকে কলেরা টিকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইউনিসেফ। আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়িতে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের এই টিকা খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ওইসব এলাকার আশেপাশের ঝুঁকিপূর্ণ এক লাখ তিন হাজার ৬০৫ জন স্থানীয় লোকজন রয়েছে। এই টিকাদান ক্যাম্পেইন আয়োজন করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইউনিসেফ। আগামী ১৭ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এই কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন চালু করা হবে। বুধবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে জেলা সির্ভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানানো হয়। সিভিল সার্জন আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, ইউনিসেফ’র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মায়নুল হাসান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা উচাপ্রু মার্মা, সিভিল কার্যালয়ে কো-অর্ডিনেটর ডা. জামশেদুল করিম। সঞ্চালনা করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম সবুজ। তথ্য মতে, রোহিঙ্গা ইতিপূর্বে তিনটি কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইউনিসেফ। ১৭ নভেম্বর শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে মোট তিন লাখ তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৫৬ জনকে কলেরা টিকা খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাম্পের পার্শবর্তী ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এক লাখ তিন হাজার ৬০৫ জন স্থানীয় লোকজনকেও ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই রাউন্ডের কলেরা টিকা খাওয়াতে রোহিঙ্গাদের জন্য উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যছড়িতে কাজ করবে ছয় সদস্যের ৭০টি দল। এছাড়া স্থানীয়দের খাওয়াতে কাজ কববে ১২টি দল। ক্যাম্পে অবস্থিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত স্থাপনাগুলোতে এই টিকা খাওয়ানো হবে। টিকার আওতায় আসবে ২০১৭ সালের পর আসা এক বছরের উপরের বয়সের রোহিঙ্গা। তারা খাওয়াতে হবে দুই ডোজ। অক্টোবর ২০১৭ সালের পূর্বে এসেছেন এদের ১২ থেকে ২৩ মাসের শিশুদের জন্য এক ডোজ এবং ক্যাম্প নিকটবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে একডোজ করে টিকা খাওয়ানো হবে। আর আগে যারা দুই ডোজ টিকা পেয়ে তাদেরকে আর টিকা দেয়া হবে না। এছাড়াও এক বছরের কোনো শিশুকে টিকা খাওয়ানো হবে না। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকা খাওয়ানো হবে। শুক্রবার বন্ধ থাকবে। যারা টিকার আওতায় আসবে তাদেরকে টোকেন দেয়া হবে। টোকেন কেউ টিকা পাবে না। কক্সবাজারের সিভিল সার্জন আবদুল মতিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ বদ্ধপরিকর। সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় ইতিমধ্যে তিনটি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে কলেরা টিকা খাওয়ানো হয়েছে। এবার চতুর্থ ক্যাম্পেইনে তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৫৬ জনকে খাওয়ানো হচ্ছে। এই ক্যাম্পেইন সফল করতে আমরা সব প্রস্তুতি হাতে নিয়েছি। তা বাস্তবায়ন করার জন্য গণমাধ্যমসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’