ঢাকারবিবার , ৬ নভেম্বর ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এক নারীর ডজনাধিক স্বামী, কে এই হাছিনা

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ৬, ২০২২ ১২:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

(নিজস্ব প্রতিবেদক)
যার একাধিক নাম,একাধিক স্বামী, একাধিক মামলা আর একাধিক ব্যবসা! যার এতকিছু একাধিক, তারপরেও তার চলাফেরা ও বেশভূষ দেখলে মনে হবে ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না কিন্তু তার কূটকৌশলের কাছে জিম্মি হয়ে আছে রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সমাজ নেতা,সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি,ছাত্র, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এমনকি বৃদ্ধ মহিলা পর্যন্ত।

ঐ নারী হলো সদর উপজেলাধীন ঝিলংজা ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডের মহুরীপাড়া কলেজ গেইট এর পিছনের এলাকার মোঃ হাছান প্রকাশ হাছান মেস্ত্রীর বড় মেয়ে ৩২ বছর বয়সী হাসিনা আক্তার, প্রকাশ হাছিনা,ওরফে জুলি বা জুলিয়া জুলি ওরফে হাসিনা সুন্দরী।

পৌর শহরের ০৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পাহাড়তলী এলাকার মুদি দোকানদার মোঃ হাছান প্রকাশ হাছান মেস্ত্রীর ৩ মেয়ে, ১ ছেলের মধ্যে হাছিনা আক্তার প্রকাশ জুলিয়া জুলি সবার বড়।সেই হাছিনাকে ২০১০ সালে টেকনাফের মালয়েশিয়া প্রবাসী মন্জুর আলম নামে এক যুবককে বিয়ে করেন। সেই ঘরে ২ মেয়ে,১ ছেলের জন্ম হয়। স্বামী মন্জুর আলম প্রবাসে থাকার সুবাদে জড়িয়ে পড়েন রফিক নামে এক মুদি দোকানির সাথে পরকিয়ায়।স্বামী মন্জুর আলমের পরিবারের লোকজন এসব জানতে পারলে সেই স্বামীর সংসারে জন্মনেয়া ২ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে সন্তানহীন এক পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। সেই টাকা আর ১ মেয়ে ও ১ ছেলেকে সাথে নিয়ে প্রথম স্বামীর ৮ বছরের সংসার ভেঙে ২ সন্তানকে নিয়ে বিয়ে করেন রফিককে। ২য় স্বামী রফিকের সাথে বেশিদিন সংসার করা হলো না। সেই সংসারে থাকাকালীন সময় আমজাদ নামে আরেক যুবকের সাথে লিপ্ত হয় পরকিয়ায়।এর জের ধরে রফিকের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।সেই ঘরে কোন সন্তান হয়নি। ৩য় জনকে প্রথম স্বামীর ২ সন্তান নিয়ে মৌখিক বিয়ে পীড়িতে বসেন আমজাদের সাথে। সেখানেও বিধিবাম। ৬ মাসও ঠিকলো সেই সংসার।পরে ৪র্থ নাম্বারে মফিজ নামে টেকনাফের আরেক যুবককে মৌখিক বিয়ে করেন। সেখানে ৭-৮ মাস সংসার করার পর তার কাছ থেকে ব্লেকমেইলিং এর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে,সবকিছু ঘুছিয়ে ২০১৪ সালের শেষের দিকে টেকনাফ থেকে চলে এসে বসতি গাড়েন ঝিলংজা ইউনিয়নের লিংক রোড় এলাকায়।

দীর্ঘদিন টেকনাফ থাকার সুবাদে কিছু মরণব্যাধি ইয়াবা কারবারিদের সাথে সখ্যতার সুযোগে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা চোরাচালানের সাথে। টেকনাফ থেকে কৌশলে ইয়াবা ট্যাবলেট এনে লিংক রোড়ের জমা করে সেখান থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও টাঙ্গাইলে বড় বড় মাদক কারবারিদের কাছে পৌঁছে দিতে লাগলো ইয়াবা। এতে করে হাছিনা সুন্দরীর চক্ষু খোলার সাথে সাথে কপালও খুলতে লাগলো।গড়ে উঠে দেশব্যাপী মাদক সিন্ডিকেট।

বেশকয়বার মাদক নিয়ে বিভিন্ন জেলায় আটক হলেও বেশিদিন জেলে থাকতে হয়নি হাছিনাকে। এসব কারবার করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ একটি সংস্থার অসাধু কিছু কর্মকর্তার সাথে দহরমমহরম সম্পর্ক জমে যায়। সেই সাথে ঢাকার কিছু মানব পাচার সিন্ডিকেট সদস্যের সাথে গড়ে উঠে বিশেষ সম্পর্ক। এবার টার্গেট নিল রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর নামে মানব পাচার কাজে জড়িত পড়ে।ওই চক্রের মাধ্যমে মানব পাচার কাজে সফলও হয়। বেশকজন রোহিঙ্গা লোককে মোটা টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়া পাঠায় বাংলদেশী পাসপোর্ট পরিচয়ে।এই ভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে প্রায় বছর খানেক এসব অবৈধ কাজ করার পর শখ জাগে চক্রের প্রধানের সাথে দেখা করবে।ওই চক্রের প্রধান থাকেন দুবাই তে। তার সাথে দেখা করতে এবং এসব অবৈধ ব্যবসার প্রসার করতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি পাড়ি জমায় দুবাই। সেখানেও বিভিন্ন প্রবাসীদের সাথে অনৈতিক কাজে জড়িত পড়লে একবছরের মাথা ২০১৬ সালে কবিল থাকে পাঠিয়ে দেয় পূনরায় বাংলাদেশে।

এসব অবৈধ কাজে ঢাকায় আসা যাওয়ার পথে গাড়ীতে পরিচয় ঘটে পেকুয়া উপজেলার শীলখালী এলাকার ছেলে ঢাকায় ঠিকাদার ব্যবসায়ী হেফাজ উদ্দিন নয়ন নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে।এরই ফাঁকে মাদক ব্যবসার টিকিয়ে রাখতে মৌখিক কন্টাক্ট চুক্তিতে বিয়ে করেন টাঙ্গাইলের সুজন,সুমন ও মামুন,মিল্টন ব্যাপারী, সাতকানিয়ার সাগর, চিটাগং রোড়ের সজল,একটি বিশেষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঢাকায় কর্মরত হাসান নামে এক সদস্য ও কক্সবাজারে কর্মরত আনোয়ার নামে আরেক সদস্যকে।
হেফাজ উদ্দিন নামে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে অর্ধ কোটি টাকা। বর্তমানে হেফাজ উদ্দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। হাছিনা বসবাসকারী বসতভিটাও হেফাজ উদ্দিন এর নামে। হেফাজ উদ্দিনের ঘরে সিহাব ও সিফাত নামে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সেই হেফাজ উদ্দিনকে গত ২০২১ সালে হাছিনা তালাক দিয়ে নতুন করে শহরের ০৯ নং ওয়ার্ডের বাদশাঘোনা এলাকার আবাসিক হোটেল কর্মচারী ৪ সন্তানের জনক সাইফুল ইসলামকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মৌখিক চুক্তিতে বিয়ে করে সাইফুলের ২০ বছরের সাজানো সুখের সংসার ভেঙে তচনচ করে দিয়েছে হাছিনা সুন্দরী।

সাবেক স্বামী হেফাজ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর সংসার থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার কারনে তাকে বাঁধা দিতে গিয়ে হাছিনার নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে আমাকে। আমার নামে ঢাকায় মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং আমার বালিশের নিচে ইয়াবা রেখে পুলিশে ধরিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়ে আমার অবর্তমানে ঘর থেকে ব্যবসার টাকা, স্বর্ণালংকার, দামী দামী আসবাবপত্র নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলে আসে। পরে আমার নামে তালাক নামা পাঠিয়ে দেয়। এই হাছিনার কারনে আমার ব্যবসা বানিজ্য সব ধ্বংস হয়ে গেছে। এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।

সম্পর্কিত পোস্ট