গ্রাহকদের থেকে নেওয়া প্রায় ৩৩৯ কোটি টাকার হদিস জানতে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পর প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রবিবার (১১ জুলাই) দুদক আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বর থেকেই অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালির নেওয়া প্রায় ৩৩৯ কোটি টাকার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই অর্থ আত্মসাৎ বা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তাই অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এখন প্রয়োজনে ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আইনে দুদককে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৮ জুলাই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাদেশ দেয় দুদক। সংস্থাটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেল গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা চালাচ্ছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় সংস্থাটি। অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে দুদক।
দুদক জানিয়েছে, গত বছর নভেম্বরে ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে তারা। সেসময় দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপ-সহকারী পরিচালক শিহাব সালামকে নিয়ে দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। এ বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানটির দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে নেওয়া দায় প্রায় ২১৪ কোটি টাকা। আর মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দায় ১৯০ কোটি টাকা। দুদকের হিসাবে স্বাভাবিক নিয়মে ইভ্যালির কাছে ৪০৪ কোটি টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু ইভ্যালির কাছে চলতি সম্পদ রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার, যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তার চলতি দায়ের বিপরীতে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।