ঢাকাবুধবার , ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুরুশকুলে বিডিএস জরিপে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি

প্রতিবেদক
আনোয়ার হোছন

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ ১:৫৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

(আনোয়ার হোছন)

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের তেতৈয়া মৌজায় দিয়ারা সেটেলমেন্ট অপারেশন চট্টগ্রামের আওতায় বিডিএস জরিপে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির মহোৎসব চলছে। জরিপ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জমির মালিকের কাছ থেকে কৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জরিপ কাজে নিয়োজিত রেজাউল করিম নামের একজন সার্ভেয়ার। সে জমির মালিকদের বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় এক কোটি টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আদায় করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা যায়, বিগত কয়েক মাস পূর্বে খুরুশকুল তেতৈয়া মৌজায় শুরু করা হয় বিডিএস জরিপের কার্যক্রম। স্থানীয় লোকজন এটিকে স্বাদরে গ্রহন করেন। এই জরিপে টাকা নেয়ার কোন বিধান না থালকেও কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জরিপের দায়িত্বে থাকা সার্ভেয়ার রেজাউল করিম জমির মালিকদের কাছ থেকে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একজনের জমি অন্য জনের নামে খতিয়ান সৃজন করে দিয়ে আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশি এমনকি নিজের ভাই-বোনের মধ্যেও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দিচ্ছে। যার কারণে বিজ্ঞ আদালতে মামলা সহ নানান সমস্যায় পড়তে পারে প্রকৃত জমির মালীকরা। স্থানীয় কিছু দালাল চক্রের মাধ্যমে সার্ভেয়ার রেজাউল করিম খতিয়ান সৃজনের নামে লুটপাট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ জমির মালিকদের। বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) প্রতিবাদের ঝড় উঠে। স্থানীয়দের প্রতিবাদের কারণে জরিপে নিয়োজিত সব লোক রাতের আধারে চট্টগ্রাম চলে গেছে।বর্তমানে তারা সেখানে বিভিন্ন জমির মালিকদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছে এবং
টাকা নিয়ে খতিয়ান দিচ্ছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী তেতৈয়া সওদাগর পাড়া এলাকার হেদায়ত উল্লাহ বাবুল বলেন-আমি একটা খতিয়ানও করতে পারি নাই। সার্ভেয়ার রেজাউল ৫টা খতিয়ানের জন্য আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে কিন্তু আমি টাকা না দেওয়াই আমার একটা খতিয়ানও হয় নাই। তিনি আরো বলেন-আমার কাগজ-পত্র যদি ঠিক থাকে তাহলে আমি টাকা দেব কেন, তাই আমি টাকা দিই নাই। একই এলাকার মোহাম্মদ হোছাইন নামের এক মুরব্বী বলেন-আমার ছেলের কাছ থেকে ৫টি খতিয়ানের জন্য ৫০ হাজার টাকা নিছে সার্ভেয়ার রেজাউল করিম। তেতৈয়া ইউসুফ ফকির পাড়া এলাকার রবি উল্লাহ রবি বলেন-সার্ভেয়ার রেজাউল আমার কাছে ৩০টা খতিয়ানের জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে, আমি টাকা দিতে পারি নাই বলে আমাকে একটা খতিয়ানও দেয়নি। তেতৈয়া সওদাগর পাড়া এলাকার নজরুল বলেন-আমার ভোগ দখলীয় জায়গাটি খতিয়ান করে দেয়ার জন্য ১ লক্ষ টাকা দাবি করে সার্ভেয়ার রেজাউল, কিন্তু আমি টাকা দিতে পারিনি বলে টাকা নিয়ে অন্যজনের নামে খতিয়ান করে দিছে। একই এলাকার সরওয়ার কামাল বলেন- সম্প্রতি আমাদের এলাকায় বিডিএস জরিপের কাজ শুরু হতে দেখে আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম যে, অন্তত এলাকার ভুমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা কমে যাবে। কিন্তু জরিপে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মকর্তা ঐ জরিপকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে। তারা টাকা ছাড়া কোন খতিয়ান করে নাই। এমনকি আমার বসত ভিটার খতিয়ানটিও টাকার জন্য আমি করতে পারি নাই। তিনি আরো বলেন-ঐ অসাধু কর্মকর্তা বিভিন্ন জমির মালিকের কাছ থেকে ১ কোটি টাকার উপরে দূর্নীতির মাধ্যমে গ্রহন করেছে।

অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানার জন্য সার্ভেয়ার রেজাউল করিমের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ঐ বিষয়ে জানার জন্য খুরুশকুল তেতৈয়া এলাকার মেম্বার আবু বক্কর ছিদ্দিক বাবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-বিডিএস জরিপের কর্মকর্তা সার্ভেয়ার রেজাউল আমাদের এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। তিনি আরো বলেন-আমিও কয়েকটা করেছি। তবে টাকা বেশি নেয়নি, অল্প টাকায় করে দিছে।

সম্পর্কিত পোস্ট