এজেন্সি ডেস্ক:
আইফোনের দাম কমানোর আভাস দিয়েছেন মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল প্রধান টিম কুক। তিনি বলেছেন, কোনো কোনো এলাকায় বিক্রি বাড়াতে তারা হয়তো আইফোনের দাম কমিয়ে দিতে পারেন। বুধবার বিবিসি বাংলার অনলাইনে প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইফোনের ত্রৈমাসিক সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটির আয় ১৫ শতাংশ কমে গেছে। একবছর আগের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির আয় কমেছে পাঁচ শতাংশ। তবে আয় কমার বিষয়টি আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। কারণ এই প্রযুক্তি কোম্পানিটি আগেই বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তাদের রাজস্ব আয় ৮৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে, যা প্রত্যাশার তুলনায় কম।
এজন্য চীনের অর্থনৈতিক শ্লথগতি অনেকাংশে দায়ী বলে কোম্পানিটি দাবি করেছে। গত তিনমাসে সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির লাভ কমেছে ১ শতাংশ, আর্থিক মূল্যে যা ১৯.৯৭ বিলিয়ন।
তবে প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেছেন, পণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে কিনতে গিয়ে ক্রেতারাও হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি বলছেন, যেখানে ডলারের দর বাড়তির দিকে থাকে, সেখানে এই পণ্যটি আরও বেশি দামী হয়ে যায়, ফলে উদীয়মান একটি বাজারে তখন বিক্রি কমে যায়।
কুক জানিয়েছেন, যেসব বাজারে মূল্যস্ফীতি রয়েছে, সেখানে মোবাইল ফোনগুলোর দামের বিকয়টি পুনরায় নির্ধারণ করার জন্য এ মাস থেকেই কোম্পানি কাজ শুরু করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির চ্যালেঞ্জ আরও কিছুদিন থাকবে বলেই তারা ধারণা করছেন।
৩১ মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে অ্যাপল ধারণা করছে, ৫৫-৫৯ বিলিয়ন ব্যবসা হতে পারে, যার মানে গত বছরের তুলনায় ৩.৪ শতাংশ আয় কমে যাওয়া। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এই অবস্থা আরও কিছুদিন থাকবে বলে মনে করছেন অ্যাপলের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা লুকা ম্যায়েস্ত্রি।
তবে এ রকম সমস্যায় শুধু অ্যাপল একাই পড়েনি। সারা বিশ্বের মোবাইল স্মার্ট ফোনের সরবরাহ ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ পড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ক্যানালিস নামের একটি বাজার গবেষণা সংস্থা। গত অক্টোবর থেকে অ্যাপলের শেয়ারের দাম প্রায় এক তৃতীয়াংশ পড়ে গেছে, কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে, আইফোনের জন্য ক্রেতাদের আকাঙ্ক্ষা কমে গেছে। এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে যখন অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছে, প্রতি তিনমাসে কী পরিমাণ আইফোন, আইপ্যাড আর ম্যাক বিক্রি হয়, সেসব তথ্য তারা আর জানাবে না।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, চীনে অ্যাপলের বিক্রি আগের বছরের তুলনায় গত তিনমাসে ২৫ শতাংশ কমেছে আর ইউরোপে কমেছে ৩ শতাংশ। তবে আমেরিকায় বিক্রি বেড়েছে ৫ শতাংশ। বিভিন্ন সেবা খাতের ব্যবসাও ১৯ শতাংশ বেড়ে ১০.৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে কুক বলেছেন, তিনি ব্যবসার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। এর কারণ হিসেবে আইপ্যাড আর ম্যাকের অব্যাহত বিক্রি এবং অ্যাপল পের মতো সেবাখাতের ব্যবসাকে তুলে ধরেছেন তিনি।
‘আমাদের রাজস্ব লক্ষ্যটি অর্জন করতে না পারাটা হতাশাজনক হলেও, আমরা দীর্ঘমেয়াদি অ্যাপলকে দাঁড় করাতে পেরেছি। গত তিনমাসের তথ্যে আসলে আমাদের ব্যবসার ভেতরের অন্তর্নিহিত শক্তিকেই প্রকাশ করছে’-বলছেন টিম কুক।