সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের পদক ও রিবন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।
গত ৩ জুন প্রকাশিত গেজেটে (২০২১ সালের ২২ নম্বর গেজেট) এটি প্রকাশ করা হয়। জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে গত ৮ মার্চ ২০২১ তারিখে জারি হয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, নির্বাচনের সাল ভিত্তিতে পদকের নামকরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নবম সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে পদকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংসদীয় নির্বাচন ডিসেম্বর ২০০৮’, দশম সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘সংসদীয় নির্বাচন জানুয়ারি ২০১৪’ এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে পদকের নাম ‘সংসদীয় নির্বাচন ডিসেম্বর ২০১৮’ নামকরণ করা হয়েছে।
ওই তিনটি নির্বাচনে যেসব পুলিশ সদস্য নির্বাচন কাজে তালিকাভুক্ত ছিলেন তারা সংশ্লিষ্ট সালের পদকের জন্য বিবেচিত হবেন বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিনটি পদকই একই ধরনের হবে। রিবনের আকারও এক হবে। তবে রঙে ভিন্নতা থাকবে।
পদক হবে সাদা সংকর ধাতুতে তৈরি। আকৃতি হবে ষড়ভুজ। দুই বিপরীত কোণের মধ্যবর্তী দূরত্ব হবে ৩৫ মিলিমিটার। পদকের সামনের দিকে বর্গাকৃতি ব্যালট বাক্সের ছিদ্রে ভাঁজ করা ব্যালট পেপার অর্ধাংশ উৎকীর্ণ থাকবে। তিনটি পদকের ওপরে সংসদীয় নির্বাচন এবং নিচে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মাস ও সালের নাম লেখা থাকবে। পদকের পেছনের দিকে মধ্যভাগে সংসদ ভবন ও ওপরে বাংলাদেশ উৎকীর্ণ থাকবে।
পদকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, এই পদক সংবিধান পদকের থেকে ছোট হবে। পোশাকে সংবিধান পদকের পরবর্তী কনিষ্ঠ স্থানে পরতে হবে। রিবন পরার ক্ষেত্রেও এই জ্যেষ্ঠতা বজায় থাকবে।
এদিকে রিবনগুলোর মাপ এক হলেও রঙে ভিন্নতা থাকবে। ২০০৮ সালের পদকের রিবনের মধ্যভাগ হবে সাদা। উভয় পাশে সবুজ গাঢ় খয়েরি এবং দুপাশে অর্থাৎ খয়েরি রঙের উভয় পাশে লাল রঙ থাকবে। প্রস্থ হবে ৬ মিলিমিটার।
২০১৪ সালের পদকের রিবনের মধ্যভাগ সাদা, উভয় পাশে লাইট গ্রে এবং দুই পাশ গাঢ় লাল হবে। ২০১৮ সালের পদকের রিবনের মধ্যভাগ সাদা, উভয় পাশে হালকা গোলাপি এবং দুই পাশ গাঢ় লাল হবে।
পুলিশ সদস্যরা নিজ নিজ পদক সংগ্রহ করবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (মিডিয়া) হায়দার আলী খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে এমন খবর তার জানা নেই। পরে অবশ্য এই পুলিশ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে গ্যাজেটের অনুলিপি সংগ্রহ করেন।
ঢাকায় কর্মরত পুলিশের এসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তা জাকির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে এর জন্য পদক পাবেন এমন তথ্য তার জানা নেই।
রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সদস্য শামীম আহমেদও এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তিনি বলেন, তার কাছে এ খবর এখনও পৌঁছায়নি। তবে এটা সত্য হলে তা হবে সুখবর। তারা অনেক ঝুঁকি নিয়েই নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেছেন। পুরস্কৃত করা হলে তারা উৎসাহিত হবেন। অবশ্য পদকের পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনাও দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এ ধরনের পদক ও রিবন দিয়ে তাদের সম্মানিত করা হয়। কোনও পুলিশ সদস্য বিদেশে শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করলেও পদক ও রিবন পান। আবার পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে দায়িত্ব পালনেও পান পৃথক রিবন। কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনের ক্ষেত্রেও এ ধরনের পদক বা রিবন দেওয়া হয়।