ঢাকাশনিবার , ১০ ডিসেম্বর ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রেঞ্জ কর্মকর্তার বদলী হলেও উদ্ধার হয়নি দখলকৃত বনভূমি

প্রতিবেদক
সিএনএ

ডিসেম্বর ১০, ২০২২ ১:৫৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রেঞ্জ কর্মকর্তার বদলী হলেও উদ্ধার হয়নি দখলকৃত বনভূমি!

(আনোয়ার হোছন)

কক্সবাজার সদরের পিএমখালী রেঞ্জের আওতাধীন খুরুশকুল বন বিটের পুলিশ্যার ঘোনা এলাকায় পাহাড় কাটা ও বনভূমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে “কক্সবাজার নিউজ এজেন্সি” অনলাইন পোর্টালে গত ১৯ অক্টোবর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে নড়েছড়ে বসে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ। শেষেমেষ রেঞ্জ কর্মকর্তাকে বদলী করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে নতুন রেঞ্জ কর্মকর্তা। ঐ রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলী করা হলেও উদ্ধার করা হয়নি খুরুশকুল পুলিশ্যা ঘোনায় চাচা-ভাতিজা সিন্ডিকেটের দখলকৃত বনভূমি।

জানা যায়, ঐ কর্মকর্তার যোগসাজসে খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল “পুলিশ্যার ঘোনা” এলাকায় স্থানীয় চাচা-ভাতিজা সিন্ডিকেট নির্বিচারে পাহাড় কেটে ও প্রায় শত একর বনাঞ্চল উজাড় করে প্লট আকারে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পুলিশ্যার ঘোনায় পাহাড় কাটা ও বনভূমি নিধনের মহোৎসব চললেও একধম নীরব ভূমিকায় বন বিভাগ। স্থানীয় চাচা-ভাতিজা সিন্ডিকেট শত একর বনাঞ্চল উজাড় করে ও পাহাড় কেটে প্লট তৈরী করে বিক্রি করার ক্ষেত্রে বন কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এসব পাহাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রানী ও বিভিন্ন ধরনের পাখি ছিল। পাহাড় কেটে ও বনাঞ্চল উজাড় করে বসতি সৃষ্টি করার কারণে এসব বন্য প্রানী ও পাখি প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারা আরো বলেন, সম্প্রতি খুরুশকুলে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় খুরুশকুল হামজার ডেইল এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র আবুল হোছন ও আবু ছৈয়দ এবং আবু ছৈয়দ এর পুত্র শহিদ উল্লাহ, হেলাল উদ্দিন এবং মৃত মমতাজ আহম্মদের পুত্র সাহাব উদ্দিন এসব বন ভূমি দখলে নিতে
কৌশল হিসেবে বাঁশের বেড়া দিয়ে কাঁচা ঘর নির্মাণ করে করছে। তারপর বিক্রি করছে চড়া মূল্যে। এসব পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল ধ্বংসে একদিকে যেমন সরকারি খাস জমি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে। এসব পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল উজাড় বন্ধ করা না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য এই এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি এসব পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে না করে ও পরিবেশ রক্ষাকারী পাহাড় ও বন উজাড় কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে তাহলে আগামী কয়েক বছর পরে দেখবেন পাহাড় ও বন উধাও হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য ৬ নাম্বার ওর্য়াডের মেম্বার স্বপন কান্তি দে এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদকে বলেন পুলিশ্যার ঘোনায় পাহাড় কেটে ও বনভূমি উজাড় করে প্লট আকারে বিক্রি করার কথা আমি শুনার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। যেভাবে গাছ পালা ও পাহাড় কেটে বিভিন্ন জনকে প্লট আকারে বিক্রি করা হচ্ছে এতে ষ্পষ্ট বুঝা যায় এসব কাজে বন কর্মকর্তারা জড়িত। যদি বন কর্মকর্তারা জড়িত না হত তাহলে কেউ এভাবে গাছ ও পাহাড় কাটতে সাহস করত না। তিনি আরো বলেন, যদি বন কর্মকর্তারা জড়িত না থাকত তাহলে ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিত। পলিথিন দিয়ে তৈরী এসব ঘর উচ্ছেদ করে পাহাড়গুলোকে বনায়নের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান ঐ জনপ্রতিনিধি।

এসব বিষয়ে জানার জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জনাব মো: আনোয়ার হোসেন সরকার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারকে বদলী করা হয়েছে আর পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দিচ্ছেন ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: ফারুক আহমদ বাবুল। তিনি আরো বলেন খুরুশকুল পুলিশ্যার ঘোনা এলাকার অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট