করোনা ভাইরাস বদলে দিল পাল্টে দিল গোটা পৃথিবী।
অতিক্ষুদ্র একটি ব্যাকটেরিয়া এতটা শক্তিশালী রূপ নিল দুনিয়ার সকল শক্তিকে পরাস্ত করল।ছোট বড় ধনী গরীব ক্ষমতাসীন ক্ষমতাহীন কোন শ্রেণীর মানুষ রেহায় পেল না,যেদিক দিয়ে যাচ্ছে সংস্পর্শে আসা সকল কে আক্রান্ত করে দিয়ে যাচ্ছে,এই ভাইরাস এর সাথে লড়ার সক্ষমতা যার শরীরে আছে সে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছে,যার শরীরে সক্ষমতা নেই সে মারা যাচ্ছে। সমগ্র পৃথিবীর নামকরা চিকিৎসক গবেষক ও ওষুধ আবিষ্কারকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক / এন্টি ভাইরাস ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের জন্য। অনেক উন্নত, উন্নয়নশীল, অনুন্নত রাষ্ট্র একে অপরের আশায় বসে আছে নতুন কোন আবিষ্কারের জন্য।
এক করোনা প্রমান করে দিয়ে গেল প্রকৃতির সাথে লড়াই করতে মানুষ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়,এটাও বলা যায় মানুষ যত শক্তিশালী শ্রেষ্ঠ হোক না কেন প্রকৃতি মানুষের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে, এবং এই প্রকৃতি ও মানুষের একজন সৃষ্টিকর্তা পরিচালনাকারী আছে,যিনি সর্বশক্তিমান।
তবে আশ্চর্যজনক হচ্ছে এই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ,বংশ বিস্তাররোধ ও মোকাবেলায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পন্থা গুলো কোরআন এবং নবী রাসূলের হাদিসের আলোকে। যেমনঃ প্রার্থনা, হারাম খাওয়া বর্জন,পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ,সংক্রমক মহামারীর সময় নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলা,হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় মুখে হাত কিংবা রুমাল দেয়া,কোয়ারেন্টাইন ইত্যাদি (আমাদের নবী করিম সঃ এর সময়ও এরকম সংক্রমণ জনিত রোগের জন্য কোয়ারেন্টাইন এর কথা বলা হয়েছিল, দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার কথা বলা হয়েছিল)।
হয়তো এই করোনা গোটা পৃথিবীর রাজনৈতিক পেক্ষাপট বা পটভূমিও পাল্টে দেবে,আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নানা দিকও পাল্টে দিবে, আমাদের মত দেশ গুলোর রাজনীতি হয়তো পাল্টে যাবে, কোন কোন দেশের সরকার বদলে যাবে,কেউ নির্বাচনের মাধ্যমে বিদায় হবে,কেউ গণরোষে বিদায় হবে, কেউ অগণতান্ত্রিক শক্তি এই জায়গাটা খুজে নিবে,আবার কোন কোন দেশের কর্তৃত্ববাদী সরকার হয়তো আরো কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠবে। এরকম পরিবর্তনের নানান রকম ইঙ্গিত নানান রকমের সম্ভাবনা আশংকাও আছে।
মানুষের অসচেতনতা যে প্রকৃতি পরিবেশ আবহাওয়ার কতটা বিপর্যয় ঘটাচ্ছে তা এই করোনা চলাকালীন জরুরী সময় ও পরবর্তী সময়ের কিছু জিনিস লক্ষ করলে স্পষ্ট বুঝতে পারা যায়। যেমনঃ নাসার সম্প্রতি এক তথ্যে বলা হয়েছে এই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি স্থল চীন এর বর্তমান আবহাওয়া বিগত পাঁচ দশক অর্থাৎ বিগত ৫০বছরে সবচেয়ে বিশুদ্ধ। বর্তমানে চীনের আবহাওয়ায় কার্বনডাইঅক্সাইড এর পরিমাণ সবচেয়ে কম।
যদি আমাদের কক্সবাজার এর দিকে তাকায় তাহলে স্পষ্ট হয় যে প্রকৃতির জন্য মানুষ কত ভয়াবহ, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে পর্যটক ও দর্শনার্থী শূন্য সমুদ্র সৈকতের অনেকটা কাছে সাগরে ডলফিন খেলা করছে।
আরো একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে করোনা আবহাওয়া বাতাসের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে না, করোনা বহন করছে কোন ব্যক্তি কিংবা বস্তুর মাধ্যমে,এর মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে মহামারী যতই হোক না কেন প্রকৃতি আবহাওয়া বাতাস বিশুদ্ধ আছে।
সব কিছুর পর্যালোচনা করলে দেখা যায় করোনা ভাইরাস একদিক থেকে মহামারীর আকার ধারণ করে পুরো পৃথিবী পাল্টে বদলে দিয়ে যাচ্ছে,মানুষের নির্মম মৃত্যু আর সৎকার সকলকে মর্মাহত করছে,
অন্যদিকে এই করোনা ভাইরাস একের প্রতি অন্যের এক দেশের প্রতি অন্য দেশের ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করে দিচ্ছে, মানুষ সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য প্রকাশ করছে, একে অন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।ব্যস্ত মানুষগুলো হোম কোয়ারেন্টাইনের কারণে পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করছে,মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হচ্ছে, প্রকৃতি তার আসল রূপ ও সৌন্দর্য্য ফিরে পাচ্ছে, কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গমন কম হওয়ায় অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় আবহাওয়া বিশুদ্ধ হচ্ছে।
এসব কিছু বিবেচনা করলে প্রমাণ হয় মহান আল্লাহ্ যা কিছুই করে মঙ্গলের জন্যই করে।
নিশ্চয়ই এই করোনা ভাইরাসের পিছনেও কোন না কোন মঙ্গল আছে। অনেকটা ঘোর আঁধার শেষে নতুন নির্মল আলোর বার্তা।
লেখক
শাহাদাত হোসেন রিপন
ছাত্রনেতা, কক্সবাজার জেলা ।