কক্সবাজারে প্রায় ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে, একজনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং অপরজনের বস্তাবন্দি মরদেহ মিলেছে। মরদেহগুলো উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. জসিম উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডুলাহাজারা রিংভং ছগিরশাহ গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জসিম উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নয়াপাড়ার খলিল আহমদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সোয়া ১১টার চট্টগ্রাম থেকে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ডুলাহাজারা ছগিরশাহ রিংভং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মালুমঘাট খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান।
একইদিন চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মো. শাহাজাহান (২৩) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড উলুবনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. শাহাজাহান ওই এলাকার আলতাজ আহমদের দ্বিতীয় ছেলে। তিনি খুটাখালী তমিজিয়া মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জুমার নামাজের প্রস্তুতি নিতে শাহজাহান নিকটস্থ ধোপার দোকান থেকে পায়জামা-পাঞ্জাবি নিয়ে বাড়িতে আসেন। এ সময় বাড়িতে আলো জ্বালাতে একটি বৈদ্যুতিক বাল্বের হোল্ডার লাগাতে যান তিনি। পরে বাড়ির লোকজন এসে দেখতে পান শাহাজাহান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিক সুইস বন্ধ করে তাকে উদ্ধার করে তারা বুঝতে পারেন শাহাজাহান আর বেঁচে নেই।
এদিকে কক্সবাজার শহরের আলীর জাহাল এলাকায় এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে একটি দোকান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
ওই যুবক শফি নামে এক ব্যক্তির স্ক্র্যাপের দোকানে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, বেলা ১টার দিকে কয়েকজন ব্যবসায়ী ফোন করে আমাকে ঝুলন্ত মরদেহের কথা অবগত করলে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মডেল থানাকে খবর দিই। পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কাউন্সিলর আরও বলেন, বারোটা থেকে সাড়ে ১২টার মাঝামাঝি সময় লোকটি আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একইদিন, বিকেলে কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী ইউনিয়নের ধলির ছড়ায় একটি পাহাড় থেকে এক কিশোরের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয়রা বস্তাবন্দী লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। তবে তাৎক্ষণিক নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।
কিশোরের বস্তাবন্দি লাশসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মরদেহগুলো উদ্ধার করে মর্গে রাখা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি তদন্ত পূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।