জেলায় শান্তি পূর্ণভাবে শেষ হলো শারদীয় দূর্গোৎসব, প্রতিমা বির্সজনে লাখো মানুষের ঢল।
আনোয়ার হোছন-সদর প্রতিনিধি
কক্সবাজার জেলায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় শান্তি পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে শারদীয় দূর্গোৎসব। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বির্সজন অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। বুধবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হয়েছে দেবী দুর্গাকে। প্রতিমা বির্সজন উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে লাখো মানুষের মিলনমেলা। ঐ মিলন মেলায় সামিল হন দেশী-বিদেশী পর্যটকরাও।
প্রতিমা বির্সজন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশা-পাশি নিরাপত্তার কাজে মাঠে তৎপর ছিল র্যাব। এছাড়াও আনসার ভিডিপি ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার কাজে ব্যস্ত ছিল।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ও কক্সবাজার পৌরসভার সহযোগিতায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি বাবু উজ্জল করের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশের সঞ্চালনায় শুরু হয় বির্সজন অনুষ্ঠান। এই বির্সজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফয়েল এমপি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম , র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক খায়রুল ইসলাম সরকার, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান।
বুধবার দুপুরের পর থেকে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে সঙ্গীতের মূর্ছনায় নেচে-গেয়ে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শোভা যাত্রা নিয়ে সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে ছুটে আসে প্রতিমাবাহী ট্রাকগুলো।শোভা যাত্রা শেষে সৈকতে একে একে সাজিয়ে রাখা হয় প্রতিমাগুলো। মাইকে ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গেই বেজে উঠে শংখ, উলুধ্বনি, বাদ্যের ঘণ্টা। সকলের কণ্ঠে ‘ জয় মা দুর্গার জয়’ শব্দে একের পর এক সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভাসানো হয় এসব প্রতিমা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিসর্জন হলেও সৈকতে নানা ধর্মের মানুষের ঢল নামে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভক্ত, পূজার্থী, দর্শনার্থী ছাড়াও দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পর্যটক ও সকল ধর্মের মানুষ বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনে শামিল হয়েছেন। এসময় সৈকতের প্রায় তিন কিলোমিটার বেলাভূমি জুড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এক দৃষ্টান্ত। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব নির্বিঘ্নে করতে আগে থেকেই বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ বলেন- এই বছর জেলায় ৩০৫টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সৈকতে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের- সভাপতি উজ্জল কর বলেন- দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান এটি। এই বির্সজন অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হওয়াই জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।