সি এন এ ডেক্স :
কক্সবাজারে ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার মামলায় এক রোহিঙ্গা মাদক কারবারীসহ চারজনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এই রায় ঘোষনা করা হয়।
রায় ঘোষণার সময় আসামীরা কাটগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর ব্লক- এ/এইচ-১৬ এর বাসিন্দা মোঃ বশির আহম্মদের ছেলে মোঃ আয়াজ, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলধজার দক্ষিণ হাজিপাড়ার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে মোঃ বিল্লাল, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি থানার মানিকছড়ি পঞ্চরাম পাড়ার মকবুল আহমদের ছেলে আজিমুল্লাহ এবং একই এলাকার মৃত ফয়জুল হকের ছেলে আবুল কালাম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, মামলা ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণীত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত চারজন মাদক কারবারীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। একই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পিপি বলেন, দন্ডপ্রাাপ্ত হাজতী আসামীদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে বিবিধান অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড আসামীদের মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য এই মামলার নদি ও কেইস ডকেট (সিডি) মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে প্রেরণ করা হবে। পাশাপাশি রায় সম্পর্কে অবগতির জন্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রায়ের অনুলিপি বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং কক্সবাজার পুলিশ সুপার ও খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হবে। হাইকোর্টের অনুমোদন পেলে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে বলে জানান তিনি।
পিপি আরো বলেন, সরকার দেশকে মাদক মুক্ত করতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আগাচ্ছে। তাই সাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে মাদক মামলাগুলো দ্রæত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এ রায়ের ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা সতর্ক হবেন বলেও জানান পিপি ফরিদুল আলম।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মইনুল আমিন।
তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পায়নি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার শহরের মাঝির ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি মাছ ধরার ট্রলার জব্দ করে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এ সময় ট্রলারে থাকা দুই মাদক ব্যবসায়ী ও ঘাটে থাকা দুইজন মাদক ক্রেতাকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে ট্রলারে ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকানো ১৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় মাদক বিক্রির নগদ টাকা ও মোবাইল।
এ ঘটনায় কক্সবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ৪২/২০। পরে র্যাব-১৫ এর আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার তদন্তভার নেন র্যাব। আসামীদের মধ্য মোঃ আয়াজ ও মোঃ বিল্লাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০২১ সালের ১০ আগস্ট আদালতে মামলার অভিযোগ পত্র দেয়া হয়। অভিযোগ পত্র গ্রহণ শেষে আদালত থানা মামলাটি এসটি ১৩৫৬/২০২১ হিসেবে বালামভূক্ত করেন। মামলার চার্জশীটে থাকা ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য নেয়া শেষে আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রায় ঘোষণা করা হয়।