ডেস্ক নিউজ:
:“চল যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে ” এই স্লেগানকে প্রতিপাদ্য ধরে ৪ মে থেকে সারাদেশে চলছে মাদক বিরোধী সাড়াশি অভিযান।
একমাসের এই অভিযানে এ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রান হারিয়েছেন ৬ জন। আটক হয়েছেন অর্ধশত পাচারকারী। আত্নগোপনে চলে গেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত পাচারকারীদের অধিকাংশ। কিন্তু প্রশাসনের এত কঠোর মনোভাব দমাতে পারেনি পাচারকারীদের। প্রতিদিনই কোন না কোন পয়েন্ট থেকে ইয়াবাসহ পাচারকারী বা পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধার করছে র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এদিকে গত ২০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশী ইয়াবা পাচারকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী । উদ্ধার করেছে প্রায় ৫ লক্ষ ইয়াবা।
চলমান বন্দুকযুদ্ধে কক্সবাজারে ৬ জন নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন, কক্সবাজার শহরের শীর্ষ ইয়াবা কারবারী মো. হাসান (৩৪), মহেশখালীর মোস্তাক আহমদ (৩৫), টেকনাফের সাবরাংয়ের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার আকতার কামাল ও টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক, নেত্রকোনার শীর্ষ মাদক কারবারী মুজিবুর রহমান এবং চকরিয়ার উপজেলার দা বাহিনীর প্রধান শাহাজাহান।
বন্দুকযুদ্ধ, চিরুণি অভিযান, প্রশাসনের হার্ডলাইন তারপরও থামছে না ইয়াবার আগ্রাসন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেয়া তথ্যমতে, ১ জুন টেকনাফের বরইতলী খাল থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। একইদিন রাত ১০ টায় সদর উপজেলার ইসলামবাদ ইউপির ফকিরাবাজার থেকে দেড় হাজার ইয়াবাসহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন (২৪) কে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এর আগে ২৬ মে শহরের কলাতলীতে ২ হাজার ইয়াবাসহ নেছার আহমদ (৫০) নামে এক পাচারকারীকে আটক করে র্যাব। ২৫ মে ১২ শ‘ ইয়াবাসহ তিন পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ। একইদিন পেকুয়ায় ইয়াবাসহ এক মাদক পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ। ২৪ মে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৬ হাজার ইয়াবাসহ ঈগল পরিবহনের ড্রাইভার আবদুল আজিজ শেখ (৪৭) ও সুপারভাইজার সোহেল রানা (২৭)কে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তার আগের দিন মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফের হাবিরছড়া এলাকা থেকে আড়াই লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিন শহরের কলাতলীর সার্ফিং চত্বর থেকে ১ লাখ ৮ হাজার ইয়াবাসহ ২ জন আটক করেছে র্যাব। ২২ মে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে ৩০ হাজার ইয়াবাসহ আলী উল্লাহকে আটক করে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা। একইদিন কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে আলী জোহরকে ২ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর। ২০ মে শহরতলীর লিংকরোড় থেকে ৬ হাজার ইয়াবাসহ মো. রিফাতকে আটক করে র্যাব।
টেকনাফ থানার ওসি রণজিত কুমার বড়–য়া বলেন, গত একমাসে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছি। ৪০ জন পাচারকারীকে আটক করেছি। এরমধ্যে ২৫ জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর টেকনাফের চিহ্নিত পাচারকারীরা ভারত, মায়ানমার, সৌদিয়া আরব ও মালেয়শিয়াতে পালিয়েছে। কিছু কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্নগোপন করেছেন। তারপরও আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।
র্যাব-৭ কক্সবাজার কোম্পানী কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন বলেন, মাদক পাচার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের দেয়া আল্টিমেটাম বাস্তবায়ন করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, আগের তুলনায় পাচার অনেকাংশে কমেছে। এখন দরকার জন সচেতনতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যদি জনগন সহযোগীতা করে তবে মাদক নির্মূল করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।