ঢাকাশুক্রবার , ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যে কোন মূহুর্তে আত্মসমর্পণ আলোর পথে আসছে ইয়াবা ডনরা

প্রতিবেদক
সিএনএ

ডিসেম্বর ২১, ২০১৮ ৬:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার : দেশের সর্বদক্ষিণের সীমান্ত উপজেলা কক্সবাজারের টেকনাফের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের একটি দল যে কোন মূহুর্তে আত্মসমর্পণের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে। সরকারের একটি বিশেষ বাহিনীর হাত ধরে এরা মাদক ব্যবসার অন্ধকার জগৎ থেকে স্বেচ্ছায় আলোর পথে ফিরতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোর এর মধ্যস্থতায় যে কোন সময় হতে পারে এ আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র মতে, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের এ প্রক্রিয়াকে সফল করতে হতে ৩ সপ্তাহ ধরে মাঠে কাজ করছেন পুলিশ কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বিশেষ একটি দল। সর্ব কিছু ঠিক থাকলে আগামি ৩ দিনের মধ্যে হতে পারে এ অনুষ্ঠান। এতে সরকার ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটি সফল পর্বের সমাপ্ত হবে এবং টেকনাফ থেকে মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার একটি অংশ পুরো সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকা মতে কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন। যাদের মধ্যে বেশিভাগ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে। টেকনাফ থেকে সারা দেশে ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে। সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণে যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকে টেকনাফ কেন্দ্রিক বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২ মাসে টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরিক দ্বন্ধ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ১৯ জন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। যার মধ্যে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারান ১৭ জন।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, সীমান্তের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরা মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসার নিরাপত্তায় অগ্নিয়াস্ত্রও মজুদ রেখেছে। এরা ইয়াবার টাকা ভাগ বাটোয়ারা করতে গিয়ে অনেক সময় একে অপরের সাথে বন্দুক যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে। পুলিশ অভিযানে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। তিনি জানান, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করছে তা বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ-র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর অভিযানে নিজের জীবন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। যার একটি অংশ স্বেচ্ছায় আত্মসমপর্ণের পথ খোঁজতে থাকে। যারা নানাভাবে যোগাযোগ করতে থাকে বেসরকারি টিভি চ্যানেল টুয়েন্টিফোর এর প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসেন এর সাথে। চ্যানেল টুয়েন্টিফোর এর প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসেন জানান, কিছুদিন আগে মহেশখালীতে জলদস্যূদের একটি অংশ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। যারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। কারাগারে এসব জলদস্যূদের সাথে যোগাযোগ করে কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী তার সাথে যোগাযোগ করেন। এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নিজদের ভুল বুঝতে পারে আত্মসমপর্ণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করলে সরকারও তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। যার পর থেকে শুরু হয় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়া। তিনি জানান, বর্তমানে বেশ কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী স্বেচ্ছায় আত্মসমপর্ণের জন্য এগিয়ে এসেছেন। এদের সাথে সরকারের বিশেষ একটি বাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামি ৩/২ দিনে মধ্যে এই আত্মসমপর্ণের অনুষ্ঠানটি হয়ে যেতে পারে।
আত্মসমপর্ণে ইচ্ছুক এক ইয়াবা ব্যবসায়ী জানান, ইয়াবার জগৎটি অন্ধকার জগৎ। যেখানে জীবনের কোন প্রকার নিরাপত্তা নেই। অনিরাপথ জগৎ থেকে এরা আলোর পথে যেতে চান। অঢেল টাকা কখনো জীবনের নিরাপত্তা দেন না।

সম্পর্কিত পোস্ট