শিগগিরই করোনা টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে বাংলাদেশ করোনা টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: রাজীন চৌধুরী
ঢাকা: শিগগিরই বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে করোনা ভাইরাসের টিকা যৌথভাবে উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, আমাদের সব কাগজপত্র তৈরি আছে।
চুক্তিপত্রও পেয়েছি। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
যেকোনো মুহুর্তে আমরা যৌথভাবে টিকা উৎপাদন শুরু করবো।
শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে জাপান থেকে উপহার দেওয়া অ্যাস্ট্রেজেনেকার দুই লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ করোনা টিকা হস্তান্তর শেষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে কোভ্যাক্সের আওতায় অ্যাস্ট্রেজেনেকার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী দুই লাখ ৪৫ হাজার ২০০টি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে জাপান। শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
এর আগে জাপানের স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটটি নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।
বাংলাদেশকে ৩০ লাখ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। শনিবার প্রথম ধাপে এ টিকা এসেছে বাংলাদেশে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ইতোমধ্যে অনেকগুলো দেশ যৌথভাবে টিকা উৎপাদন করছে। তারা ভালো ফল পাচ্ছেন।
টিকা কি যৌথভাবে উৎপাদন হবে নাকি বোতলজাত করণের কাজ হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, তারা আমাদের বাল্ক মেডিসিন পাঠাবে, আমাদের এখানে বোতলজাত ও লেভেলিং করা হবে।
দেশে করোনার টিকা প্রয়োজন ২৭ কোটি (দুই ডোজ করে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কতটুকু সংগ্রহ করতে পেরেছে? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, এর সঠিক তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিতে পারবে।
তিনি বলেন, আজ জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ করোনা টিকা উপহার দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও টিকা দেবে দেশটি। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশে অনেক পুরোনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশ-জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুক থাকুক।
তিনি আরও বলেন, তবে একটি বিষয় দেশে আমরা হাসপাতাল বেড, ভেন্টিলেশন বানাতে পারি, অধিকতর করোনা ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করতে পারি। কিন্তু এই মহামারিকে দূরে রাখার জন্য যেটা প্রয়োজন তা হলো, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তারা ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাই দেশবাসীর কাছে আমরা আকুল আবেদন নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ও দেশের নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি থেকে উতড়ে উঠতে হলে আপনার নিজেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ আপনার একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, করোনা মহামারিতে করোনা প্রতিরোধের জন্য অনেক বাংলাদেশি নাগরিক অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন। করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশে টিকা দান কর্মসূচি চালু থাকা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য জাপানি জনগণ বাংলাদের বন্ধুদের কাছে এটিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশকে সহযোগীর জন্য সব সময় জাপান প্রস্তুত রয়েছে।
এ লক্ষে প্রথম দফায় কোভ্যাক্সের আওতায় অ্যাস্ট্রেজেনেকার দুই লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ করোনা টিকা বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে জাপান। আমরা পর্যাক্রমে মোট ৩০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে উপহার দেবো। আগামী মাসে আরও টিকা দেওয়া হবে বলেনও জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।