প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষ পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। যেসব বিদ্যালয়ের আশপাশে বন্যার পানি কমেছে সে পানিতে জমে থাকা কচুরিপনা ও আগাছা পরিষ্কার প্রয়োজন। করোনাকালীন দীর্ঘ বিরতির পর বিদ্যালয় খুলতে এমন একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আর এসব দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটিকে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-ছাত্রীদের বসার পরিকল্পনা হিসেবে ৩ ফুট দূরত্ব রেখে বেঞ্চ স্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া শুধুমাত্র পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আলাদা কক্ষে বসিয়ে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুপাতে বসাতে হবে। যেমন শনি ও মঙ্গলবার প্রথম ও ২য় শ্রেণি। রবি ও বুধবার ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণি। তবে এ বছর শিশু শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও মাস্ক পরিধান
বিদ্যালয়ের সকল মোটরলাইন সার্বক্ষণিক সচল রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন পানির প্রবাহ ঠিকমতন থাকে। এছাড়াও শতভাগ মাস্ক পরিধান করতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। বিদ্যালয়ে মাস্ক মজুদ, সাবান পানি, ব্লিচিং পাউডার, প্যারাসিটামল কিনতে বলা হয়েছে।
মগ-জগ ও থার্মোমিটার
শরীরের তাপমাত্রা মাপতে বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড থেকে ইনফারেড থার্মোমিটার কেনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২টি বালতি ও জগ এবং ১২টি মগ কেনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে মুখ খুললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, অধিদপ্তরের নির্দেশনার পর এসব জিনিস অধিকাংশ বিদ্যালয় ক্রয় করেছে। তবে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় অবশ্যই তাপমাত্রা মেপে এরপর ঢুকতে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি
টয়লেট পরিষ্কার ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ডিপিই। এজন্য বিদ্যালয়ে হারপিক, সাবান কিনতে ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার নিশ্চিত করতে জানানো হয়।
অধিদপ্তরের নির্দেশনায় আরোও বলা হয়, বিদ্যালয়ে উপস্থিত সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিতরণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার করতে হবে। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিমার্জিত পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ পরিমার্জিত পাঠ পরিকল্পনা সংগ্রহের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষকরা যেন পরিকল্পনা অনুযায়ী পাঠদান করতে পারেন ও অভিভাবকদের যুক্ত করতে পারেন সে নির্দেশনাও বিদ্যালয় খোলার জন্য দেয়া হয়েছে।
ডিপিইর তথ্য থেকে জানা যায়, নতুন পাঠ পরিকল্পনা পাওয়ার সঙ্গেই বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ ও প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবগত করা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভব হলে মূল্যায়নের মাধ্যমে ফল প্রস্তুতের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণির ছাড়পত্র ও প্রশংসাপত্র প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, সরকার থেকে নির্দেশ দেয়া মাত্রই যেন বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া যায় এজন্য স্কুল রিকভারি প্ল্যান অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করছেন থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা। গত ২৩ আগষ্ট থেকে সব শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে অফিস করছেন বলে তিনি জানান।