কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদ্ঘাটন করতে পেরেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশসহ নানা তদন্তকারী সংস্থা হত্যাকাণ্ডের পেছনের খবর জানতে পেরেছে। যেকোনও সময় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’ বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।
হাসানুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পে জেলা পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন, সিআইডি থেকে শুরু করে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা একযোগে কাজ করছি। যদিও জেলা পুলিশ মামলার তদন্তের কাজটি করছে। তবে ঘটনার মোটিভ এবং ঘটনার পেছনে সরাসরি কারা যুক্ত, এসব বিষয়ে আমরা একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। সেদিক দিয়ে আমরা বলতে পারি, তদন্তের কাজ অনেক এগিয়েছে। এ কারণে ঘটনার মূল অভিযুক্তদের খুব দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।’
ক্যাম্পে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান আরও বলেন, ‘এই হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে যারা গ্রেফতার হয়েছে, আমরা তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছি এবং বিভিন্ন উৎস থেকে আসা নানা তথ্যের নোট নিচ্ছি। যেহেতু তদন্তাধীন বিষয়, তাই সবকিছু উন্মুক্ত করা যায় না। আমরা আমাদের মতো করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এতে আমরা আশান্বিত।’
এদিকে, ওই মামলায় গ্রেফতার আরও তিন জনকে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সকালে উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ১ ইস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৫ ব্লকের বাসিন্দা জকির আহমদের ছেলে জিয়াউর রহমান, লম্বাশিয়া ৮ ডব্লিউ ক্যাম্পের এইচ ৫৪ নং ব্লকের মৃত মকবুল আহমদের ছেলে মোহাম্মদ সালাম এবং ৫নং ক্যাম্পের রজক আলীর ছেলে মো. ইলিয়াসকে আদালতে আনে পুলিশ। এ নিয়ে এই মামলায় পাঁচ রোহিঙ্গা যুবককে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হাতে নিহত হন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। নিজ অফিসে অস্ত্রধারীরা তাকে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে। এ সময় তিন রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।