ডেক্স নিউজ :
দুর্গা পূজার টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল কক্সবাজার।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাসহ চারদিনের টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামবে এমনটি জানিয়েছেন হোটেল সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এই উপলক্ষে দেশের প্রধান পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের তারকামানের হোটেলসহ প্রায় অধিকাংশ হোটেলের বুকিংও প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের ঢল নামবে।
জানা যায়, আগামীকাল শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে রোববার (১২ অক্টোবর) হচ্ছে দূর্গপূজার ছুটি। সেই সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করায় টানা চার দিনের ছুটি পেয়ে ভ্রমণপিপাসু চাকরিজীবীরা যেমন খুশি, তেমনি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। এবারের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পূজার ছুটি যোগ হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুরা সে সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন। একারণেই আমাদের হোটেলের ২৪৫টি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।
সূত্র মতে, সৈকত ঘিরে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এসব হোটেলে দৈনিক প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। এবারের দুর্গপূজার মধ্যে দিয়েই পর্যটন মৌসুমটা চাঙ্গা হচ্ছে তাই হোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতি নেতাদের মাঝে আনন্দের বার্তা বইছে।
হোটেল সি আরাফাতের ম্যানেজার মইনুল হাসান বলেন, যেই হতাশার মধ্যে ছিলাম আমরা তা দূর হচ্ছে দুর্গাপূজার ছুটিতে রুমের বুকিং বাড়ায়। তারকামানের হোটেল লং বিচের ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজার এএমডি শহিদুল আলীম বলেন, গত ছয় মাস ধরে মন্ধা গেলেও চার দিনের ছুটিতে ৭০ শতাংশ রুম ভাড়া বুকিং হয়েছে ইতিমধ্যে।
হোটেল সায়মনের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান নুর বলেন, ভ্রমণপিপাসুদের আগ্রহের জায়গা কক্সবাজারের নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকত। পূজার ছুটিতে পর্যটকের আগমন বাড়ছে। এতেই চাঙ্গা হচ্ছে কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলো। সব স্পটে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত টুরিস্ট পুলিশ। নিরাপত্তা জোরদারে স্পটে স্পটে লাগানো হচ্ছে সতর্কতামূলক সংকেত ও সাইনবোর্ড।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, ৭০-৮০% বুকিংয়ের হিসাব অনুযায়ী ইতিমধ্যে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ লাখ পর্যটকের আগমন হচ্ছে। সরকার পতনের পর এই প্রথম এতো পর্যটকের আগমন ঘটছে।
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, গত মাসের তুলনায় চলতি অক্টোবরে এই প্রথম হাজার হাজার পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। এতেই আগের ক্ষতি কাটিয়ে লাভে পৌঁছাতে পারবে ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার সিটি কলেজের ট্যুরিজম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মঈনুল হাসান পলাশ সময়ের আলোকে বলেন, পর্যটক বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব প্রাপ্তদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধু পর্যটক আসে না হাউমাউ করলে হবে না প্রয়োজন বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটানো কিন্তু তাতে ব্যর্থ।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম বলেন, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতে পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য পয়েন্টগুলোতে টহল দলের পাশাপাশি রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশও। সবমিলিয়ে প্রস্তুত টুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সময়ের আলোকে বলেন, পর্যটকদের সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সূত্র : সময়ের আলো।