গ্রাহকদের ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় ব্রোকারেজ হাউজ বাংকো সিকিউরিটিজ লিমিলেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (৩০ জুন) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক জুলফিকার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন মামলা তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আসামি আব্দুল মুহিতকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল ২৯ জুন রাতে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের তাকে আটক করে। গতকাল সকালে দেশ ত্যাগের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী আব্দুল মুহিত বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। ওই সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে দেশ ত্যাগে বাধা দেয় এবং তাকে আটকে রাখেন।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বাংকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও তার ছয় পরিচালকের বিরুদ্ধে গত ১৪ মে মতিঝিল থানায় অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় আব্দুল মুহিত ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও জামিল আহমেদ চৌধুরী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মে ও ৬ জুন বাংকো সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে গত ৭ জুন কোম্পানিটিতে বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই। ওই সময় ব্রোকারেজ হাউজটির সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ৬ জুনের হিসাবে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতি পায় ডিএসই। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসই কোম্পানির কাছ থেকে ওই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টের ঘাটতির ‘গ্রাহকের পরিশোধ যোগ্য সমন্বয়সাধন বিবরণ’ গ্রহণ করে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বাংকো সিকিউরিটিজ লিমিলেড ও তাদের মালিকপক্ষ বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার আত্মসাত করেছে। এ অর্থ সমন্বয় না করেই তাদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কোম্পানিটির এমন কর্মকাণ্ড শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। পাশাপাশি, সাধারণ বিনিয়োগকারীকে তাহাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত করে তুলেছে।
এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও শেয়ারবাজারের শৃঙ্খলার রক্ষায় ডিএসই বাংকো সিকিউরিটিজসহ কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪০৯ ধারায় প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।