কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল পূর্ব হামজার ডেইল “পুলিশ্যার ঘোনা” এলাকায় বীরদর্পে চলছে পাহাড় কাটা ও শত শত একর বনাঞ্চল ধ্বংসের মহোৎসব। এতকিছুর পরেও নীরব বন বিভাগ। শত শত একর বনাঞ্চল উজাড় করে ও পাহাড় কেটে প্লট তৈরী করে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।যাদেরকে স্থানীয়রা চাচা- ভাতিজা সিন্ডিকেট নামে চিনে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই সিন্ডিকেট বীরদর্পে বন বিভাগের শত শত একর বনাঞ্চল ধ্বংস করে এবং পাহাড় কেটে প্লট বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সরেজমিনে পরির্দশন ও অনুসন্ধানে জানা যায় খুরুশকুল মৌজার বি এস 4 নাম্বার সিটের অন্তর্ভুক্ত বি এস দাগ নং-5048 ও বি এস 1নং খাস খতিয়ানের আন্দর মোট-145.89 একর জমির মধ্যে দক্ষিণ-পূর্বাংশের অনুমান 100 একর খাস জমি(পাহাড়) দীর্ঘদিন ধরে খুরুশকুল হামজার ডেইল এলাকার জনৈক আব্দুল মান্নান প্র: পুলিশ্যার ওয়ারিশরা অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। এক সময় ঐসব পাহাড়ে বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রানী বসবাস করত। সম্প্রতি খুরুশকুলে জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় খুরুশকুল হামজার
ডেইল এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র আবুল হোছন ও আবু ছৈয়দ এবং আবু ছৈয়দ এর পুত্র শহিদুল্লাহ, মোঃ সেলিম, হেলাল উদ্দিন ও মৃত মমতাজ আহমেদের পুত্র সাহাব উদ্দিন সিন্ডিকেট এসব পাহাড় কেটে ও বনাঞ্চল ধ্বংস করে প্রতি গণ্ডা পাহাড় বিক্রি শুরু করেছে পঞ্চাশ হাজার থেকে আশি হাজার টাকা দামে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন- এসব পাহাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রানী ও বিভিন্ন ধরনের পাখি ছিল। পাহাড় কেটে ও বনাঞ্চল উজাড় করে বসতি সৃষ্টি করার কারণে এসব বন্য প্রানী ও পাখি প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারা আরো বলেন- বন বিভাগের জায়গা দখলে নিতে ভূমিদস্যুরা কৌশল হিসেবে বাঁশের বেড়া দিয়ে কাঁচা ঘর নির্মাণ করে করছে। তারপর বিক্রি করছে চড়া মূল্যে। এসব পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল ধ্বংসে একদিকে যেমন সরকারি খাস জমি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে। এসব পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল উজাড় বন্ধ করা না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য এই এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি এসব পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে না করে ও পরিবেশ রক্ষাকারী পাহাড় ও বন উজাড় কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে তাহলে আগামী কয়েক বছর পরে দেখবেন পাহাড় ও বন উধাও হয়ে গেছে। তাই দ্রুত পাহাড় ও বন রক্ষায় প্রশাসনের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
বীরদর্পে পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল উজাড়ের বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য সিন্ডিকেট প্রধান আবুল হোছনের সাথে কথা বলার উদ্দেশ্যে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও সে রিসিভ না করাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে খুরুশকুল বিট অফিসার মোঃ মানিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল ধ্বংসের বিষয়ে আমি জানি। আমি ঘটনাস্থল পরির্দশনে গেলে অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন আমাকে মারার জন্য থেড়ে আসে ও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে। বিষয়টি উধ্বর্তন অফিসারদের অবগত করা হয়েছে।
পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল ধ্বংস করে প্লট আকারে বিক্রি করার বিষয়ে পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি একপ্রকার দায়সারাভাবে জবাব দেন। তিনি বলেন-অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। উল্লেখিত বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখার জন্য বিট অফিসারকে বলতেছি। এতে এলাকার লোকজন মাননীয় জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপের দাবী করেছে।