জসিম সিদ্দিকী: কক্সবাজারের চার সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ৩৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩০ জনকে বৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে হয়েছে চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। এর মধ্যে কর ফাঁকি ও সম্পদের বিবরণী জমা না দেয়ায় কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ, প্রার্থীর পক্ষে নেয়া স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে মহেশখালী উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক, অসম্পূর্ণ আবেদনের কারণে কক্সবাজার-৩ (সদর- রামু) আসনে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম এবং কক্সবাজার-৩ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
গতকাল সকাল ১০ কক্সবাজার হিল ডাউন সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। দুপুর আড়াইটার মধ্যেই জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মৌখিকভাবে চার জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল এবং ২৬ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষনা করেন। তবে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে চার জনের মনোনয়নপত্র অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ চার জন হলেন, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে গণফ্রন্টের প্রার্থী ডক্টর আনসারুল করিম, জামায়াত নেতা ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের বিএনপির প্রার্থী, সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল এবং কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া-টেকনাফ) আসনের জাপা মনোনীত প্রার্থী মাস্টার এমএ মনজুর।
এদিকে বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে কক্সবাজার-৩ আসনের বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলের সমর্থকেরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ করা হয়। পরে সন্ধ্যায় ৪ জনকেই বৈধ ঘোষনা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বৈধ ঘোষিত প্রার্থীদের তালিকা জেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়।
সকালে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে লুৎফুর রহমান কাজলের বিরুদ্ধে আয়কর প্রদান সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তুলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমল ও তাঁর লিগ্যাল এডভাইজার এডভোকেট ফরিদুল আলম। এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদের দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রে মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ও আইসিটি এ্যাক্টে মামলার বিষয়ে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ উঠায় সেটিও অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ঝুলিয়ে রাখা হয়।
বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাফর আলম, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাসিনা আহমেদ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মৌলভী মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আলী আজগর, বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির প্রার্থী আবু মো: বশিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী তানিয়া আফরিন ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রার্থী মুহাম্মদ ফয়সাল।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, সাবেক সাংসদ আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হামিদুর রহমান আজাদ (কারান্তরীন), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী আবু ইউসুফ মুহাম্মদ মনজুর আহমদ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এর প্রার্থী শাহেদ সরওয়ার, গণফ্রন্টের প্রার্থী পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিম, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর প্রার্থী মো: জিয়াউর রহমান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর প্রার্থী এএম মাসুদুল ইসলাম মাসুদ ও বাংলাদেশ মুসলীম লীগের প্রার্থী মো: শহীদুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী জসিম উদ্দিন।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী লুৎফুর রহমান কাজল, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ আমিন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রার্থী মো: হাছন।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরী, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, সাবেক সাংসদ ও হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা ও বিএনপি সমর্থিত সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী মোহাম্মদ শোয়াইব, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী রবিউল হোছাইন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল মনজুর, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রার্থী সাইফুদ্দিন খালেদ।