চলমান করোনা মহামারির মধ্যে সরকার যখন দুস্থ ও অসহায় মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তখন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গ্যারেজে পচে নষ্ট হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
মঙ্গলবার (০৮ জুন) পচে যাওয়া এসব ত্রাণসামগ্রী ফেলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (০৯ জুন) উপজেলা মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য, ত্রাণ সহায়তা দেওয়া সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গ্যারেজে রাখা ১০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ৯০ প্যাকেটই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন গ্যারেজে পড়ে থাকলেও সরকারি এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। প্যাকেটে থাকা আলু-পেঁয়াজ পচে গেছে। চাল-ডালও নষ্ট হওয়ার পথে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, ত্রাণ সহায়তা চেয়ে জাতীয় জরুরি সেবার ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়েও খাদ্য সহায়তা পাননি। এমনকি ইউএনও অফিস থেকেও তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার মানুষের জন্য করোনা দুর্যোগে গত ৩ মে ১২১ নম্বর স্মারক মূলে জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ওই টাকায় ১০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী কিনে ইউএনওর গাড়ি রাখার গ্যারেজের একটি কক্ষে রাখা হয়। যার প্রতি প্যাকেটে ছিলো ১০ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, পাঁচ কেজি আলু, দুই কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি লবণ, এক কেজি চিনি ও দুই প্যাকেট সেমাই। ১০০ প্যাকেটের মধ্যে ঈদের আগে মাত্র ১০ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছিলো। বাকিগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, উপজেলার বাস্তা গ্রামের চাঁন মিয়া ও আছর উদ্দিন গত ঈদের আগে ৩৩৩ নম্বরে একাধিকবার ফোন দিয়েও খাদ্য সহায়তা পাননি। ইউএনও অফিস তাদের কোনও ধরনের সহায়তা দেয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, এসব ত্রাণসামগ্রী ইউএনওর বাসায় ছিলো। সেগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংগাইর ইউএনও রুনা লায়লা বলেন, মাত্র ১০ প্যাকেট ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এমন তথ্য সঠিক নয়। ১০০ প্যাকেট ত্রাণের মধ্যে ৫৪ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। বাকি প্যাকেটগুলোর কিছু আলু পচে গেছে। সেগুলো কিনে পরবর্তী সময়ে বিতরণ করা হবে।