জসিম সিদ্দিকী: বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেয়া হবে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) এমন আশ্বাসের কয়েক ঘণ্টা পরেই এক রোহিঙ্গা শিশুর পায়ে গুলি চালিয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)। এতে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া আনসার হোসেন নামের এক রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
২৮ জুন দুপুর ৩টার দিকে মিয়ানমারের বিজিপি এই গুলি চালায়। এই ঘটনায় শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। গুলিবর্ষণের পর অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের সীমানায় আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে ৩ জন রোহিঙ্গা সীমান্তের শূন্যরেখার কোনার পাড়ার দক্ষিণে খালের পাশে অবস্থান করছিলেন। এসময় মিয়ানমারের বিজিপি তাদের লক্ষ্য করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে আনসার হোসেন নামের এক রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। তার বাবার নাম জমির হোসেন।
তুমব্রু সীমান্তে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, গুলিবর্ষণের ঘটনায় শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গার মাঝে আতংক বিরাজ করছে। অনেক রোহিঙ্গা আতংকে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পুলিশ ফাড়ির পরিদর্শক ইমন চৌধুরী জানান, কোনার পাড়ায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনা তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছেন। গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, দুপুরে বিজিবির সঙ্গে বৈঠকে তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দেয় বিজিপি। পতাকা বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায় বিজিবি। এর আগে, বেলা ১২টার দিকে বিজিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ে পতাকা বৈঠক শুরু হয়। এতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিপির মংডু রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাঈন টুও। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিবুল্লাহ। গতকাল দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলা বৈঠকে, রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও দুই বাহিনীর মধ্যে তথ্য বিনিময়, যৌথ টহল, মাদক চোরাচালন প্রতিরোধ ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।