ঢাকাবুধবার , ৩০ জুন ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা কিং লাইট হাউজের সেলিম প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে- প্রশাসন নির্ভিকার

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুন ৩০, ২০২১ ১:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীর পাড় এলাকায় এক সময় পলিথিন বিক্রি করতো সেলিম। কয়েক বছর বাজারে পলিথিন বিক্রি করে চালাত সংসার। সামান্য পলিথিন বিক্রিতা থেকে সে এখন কোটিপতি। ইয়াবা কারবারে বর্তমানে তার আলিশান জীবন-যাপন। সেলিমকে সবাই কাটা বন্দুক ওরফে গুলি সেলিম হিসেবে চেনেন। কক্সবাজার শহরের ১২ নং ওয়ার্ড পূব লাইট হাজউস্থ ফাতের ঘোনা এলাকার বর্তমান বাসিন্দা। এছাড়া ইয়াবা ডন হিসেবেও এলাকায় বেশ পরিচিত। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশ কয়েকটি মামলাও। সিনহা হত্যাকান্ডের পর পুলিশের একযোগে বদলির সুযোগ নিয়ে ফের প্রকাশ্যে আসে গুলি সেলিম। পুলিশ বদলির আগে আত্মগোপনে ছিল সে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর অভিযানের মুখেও ইয়াবার কারবার চালাচ্ছে ফাতের ঘোনার এই ইয়াবা ডন সেলিম। কয়েকজন ব্যক্তির মাধ্যমে তার ইয়াবা কারবারি চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে ইয়াবা কারবার করে সামান্য পলিথিন বিক্রিতা থেকে সেলিম এখন কোটিপতি। এতো অভিযান হলেও রহস্যজনক কারণে সেলিম বারবার অধরাই থেকে যাচ্ছে।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে- দীর্ঘদিন আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে সেলিমের বাবা আবদুছ সালাম। ১৭ বছর আগে আবদুছ সালাম সন্তানদের নিয়ে শহরের ঘোনারপাড়া কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ভাড়ায় থাকতেন। তখন আবদুছ ছালাম ফিশিং ট্রলারের শ্রমিক ও মাটিকাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেলিম গোলদিঘীর পাড়া এলাকায় বাজারে পলিথিন বিক্রি করতো। কিন্তু ৬ বছর আগে শহরের পূর্ব লাইট হাউজ পাড়ার ফাতেরঘোনার এক ইয়াবা কারবারির সহায়তায় ইয়াবার কারবার শুরু করে সেলিম। এরপর সেলিম ও তার পরিবারকে আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। অল্প দিনেই ফাতেরঘোনা এলাকায় ইয়াবা ডন বনে যায় সেলিম। শুধু ফাতের ঘোনা নয়, শহরের লাইটহাউজের পশ্চিমপাশে ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে ‘কটেজ জোনে’ ইয়াবা বিক্রি শুরু করে সে। ইয়াবা কারবারের সুবাধে কটেজ জোনে সেলিম একটি দোকানও খুলেছি। ওই দোকান থেকে পুরো কটেজ জোনে ইয়াবা সরবরাহ করে সেলিম ও তার লোকজন। সেলিমকে ইয়াবা কারবারের সহায়তা দিয়ে আসছে বেশ কয়েকজন গডফাদার।

এলাকাবাসীর অভিযোগ- ইয়াবার কারবার করে মাত্র ৬ বছরেই কোটিপতি বনে গেছে গুলি সেলিম। ফাতেরঘোনার প্রধান সড়কের পাশে জায়গা কিনে দালান নির্মাণ করেছে। কটেজ জোনে খুলছে দোকানও। রয়েছে বিভিন্ন স্থানে জমিও। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিত্যনতুন দামি সব মডেলের বাইক কেনার শখও রয়েছে তার। প্রতি বছরে অন্তত দুটি বাইক হাঁকিয়ে চলে। ইয়াবার কারবারে সহায়-সম্পদে ব্যাপক পরিবর্তন আসার পর তার বাবা আবদুছ সালামও কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়েছিল। বর্তমানে কৌশল হিসেবে একটি দোকান নিয়ে বসে আছে। পরিবারের সবাই চলে সেলিমের টাকায়।

এলাকাবাসীর প্রশ্ন- ইয়াবার বিরুদ্ধে যেখানে সরকার কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দিয়েছে সেখানে ফাতেরঘোনা এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা ডন সেলিম কিভাবে ইয়াবার কারবার চালিয়ে যাচ্ছে তা রহস্যজনক।

এলাকার সূত্রে জানা গেছে, সিনহা হত্যাকান্ডের আগে সেলিমকে খুঁজতে অনেক বার পুলিশ এসেছিল তার বাড়িতে। বেশ কয়েকবার অভিযানও চালিয়েছিল তার বাসায়। কিন্তু সে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। অনেক দিন আত্মগোপনে ছিল গুলি সেলিম। কক্সবাজারের পুলিশ একযোগে বদলির পর ফের এলাকায় ফিরে সেলিম। এলাকায় ফিরে আগের মতো চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা কারবার। দৃশ্যমান কোন ব্যবসা বা চাকরি না থাকলেও তার চলাফেরা আলিশান। এলাকার সবাই গুলি সেলিমকে ইয়াবা ডন হিসেবে চেনেন। বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর নজরে না থাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে সেলিম।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com