(আনোয়ার হোছন)
কক্সবাজার সদর উপজেলার গুরুত্বরপূর্ণ ইউনিয়ন এখন খুরুশকুল। যেখানে চলছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। খুরুশকুলে প্রায় দুই হাজার সিএনজি চালক ও প্রায় দেড় হাজার টমটম চালকের বসবাস। দেশে দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতিতে এসব চালকরা সংসার চালাতে হিমসিম খেলেও বন্ধ হচ্ছে না সড়কের বিভিন্ন স্থানের চাঁদাবাজি। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দোহায় দিয়ে আদায় করা হচ্ছে টাকা। চাঁদার টাকা দিতে দিশেহারা হয়ে গেছে খুরুশকুলের সিএনজি ও টমটম চালকরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুরুশকুলে সিএনজি ও টমটম চালকদের কাছ থেকে শহরের বাজার ঘাটা, রাস্তার মাথা, চৌফলদন্ডী ব্রীজ ও বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এসব অবৈধ চাঁদা নেওয়া হয় আর চাঁদাবাজদের দাবীকৃত টাকা না দিলে চালকদের করা হয় হয়রানি ও লাঞ্ছিত। এসব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়াই চাঁদাবাজরা দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিএনজি চালক বলেন, সারা বছর চাঁদার টাকা দিতে দিতে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। সারাদিন গাড়ী চালিয়ে বাজারের টাকা জোগাড় করতে না পারলেও দিয়ে দিতে চাঁদার টাকা। প্রতিদিন বাজার ঘাটায় দিতে হয় ৩০-৫০ টাকা, রাস্তার মাথায় দিতে হয় ২০ টাকা, চৌফলদন্ডী ব্রীজে দিতে হয় ২০ টাকা। আমার জানা মতে এসব চাঁদার কোন বৈধতা নাই। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তারা এসব চাঁদা আদায় করছে। এসব চাঁদাবাজদের হাতে আমরা চালকরা জিম্মি হয়ে আছি।
আনোয়ার হোসেন নামের একজন টমটম চালক বলেন, আমার নিজস্ব কোন গাড়ী নাই। আমি ভাড়া নিয়ে টমটম চালায়। সারা গাড়ী চালিয়ে গাড়ীভাড়া ও চার্জ খরচ দিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। গাড়ি চালায় আমরা আর টাকা নেয় চাঁদাবাজরা। প্রতিদিন একটা টমটম গাড়ি থেকে রাস্তার মাথায় বোরহান কে দিতে হয় ২০ টাকা, চৌফলদন্ডী ব্রীজে… কে দিতে হয় ২০ টাকা, মনু পাড়া বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে মহিউদ্দীন কে দিতে হয় ২০ টাকা। এসব চাঁদার কোন বৈধতা না থাকলেও তারা মাসের পর মাসে আদায় করে যাচ্ছে। আমরা কোন কারণে চাঁদার টাকা দিতে গড়িমসি করলে আমাদেরকে মারধর করা হয়। আমরা এক প্রকার নিরুপায় হয়ে এসব চাঁদা দিই।
এসব বিষয়ে জানার জন্য খুরুশকুল সিএনজি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফি আজমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা এসব অবৈধ চাঁদা বন্ধ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নাই। এসব চাঁদাবাজদের সাথে আছে প্রভাবশালী কিছু লোক। তবে আমাদের সমিতির কোন চালক যদি কোন সমস্যায় পড়ে তাহলে আমরা যতটুকু পারি সহযোগীতা করি। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বাহনা দিয়ে অবৈধ চাঁদা আদায় বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই শ্রমিক নেতা।