নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার শহরতলীর নাজিরারটেক এলাকায় জনসচেতনতার অভাবে উল্লেখ্যযোগ্য হারে বেড়েছে বাল্য বিবাহ। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুকের কারনে এ বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে প্রতিনিয়ত হিমশিমে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম এ জাতি থেকে অন্ধকার সমাজ ছাড়া আর কিছুই আশা করতে পারবে না বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টজনরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সচেতনতা আর অশিক্ষিত অবক্ষয় এর কারনে বিশাল এ দারিদ্র জনগোষ্টি সম্প্রতি এ বাল্য বিবাহে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এ ধরনের ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই বললেই চলে। আর অন্যদিকে এ ঘটনাগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় সচেতন সমাজ।
জানাগেছে, ৫ নভেম্বর বিকালে নাজিরারটেক এলাকার জনৈক রুবেলের মা’র ১৫ বছরের ছেলে মুবিনের সাথে ১৩ বছরের এক কিশোরীর বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটেছে। এতে সমাজের মান্যগন্য ব্যক্তিরা বাধা সৃষ্টি করলে দাঙ্গা হামঙ্গা করতে আসে রুবেলের মা। এ ধরনের বীরদর্পের বেপরোয়া বাল্য বিবাহ ওই এলাকায় আরও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে বর কনে পক্ষের লোকজন উভয় ভাসমান মানুষ হিসেবে ওই এলাকায় বাস করে আসছে।
এনিয়ে নাজিরারটেক এলাকার বাসিনিয়া পাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম বাসিন্যা জানান, তাদের এলাকার আইনশৃংখলা ভেঙ্গে পড়েছে। আযানের সময় ডাকঢোল পিটিয়ে হৈচৈ থেকে শুরু মোবাইলে মোবাইলে যৌন ভিডিও’র শিকার হয়ে বর্তমান বাল্য বিবাহ অব্যাহত রয়েছে। তিনি এ গুলো বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আক্তার কামাল জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারনে চর পাড়ার মানুষের মাঝে আইন আদালত বুঝাতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে বিষয়টি তিনি খোঁজ খবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
কক্সবাজার পৌরসভার ১ ও ২ নম্বার ওয়ার্ডের মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিষ্টার আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংসদে আইন পাশ করেন। এই আইনের সার্বিক ব্যবস্থাপনার একমাত্র লক্ষ্যে উদ্দেশ্য হচ্ছে বাল্য বিবাহ বন্ধ করা। এ জন্য প্রতি ওয়ার্ডে কাজী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাতে সহজে বাল্য বিবাহ বন্ধ করা যায়। তিনি এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় আলেম ওলাদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি মতবিনিময় সভা করতে পারে তাহলে সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে। এব্যাপারে তিনি বাল্য বিবাহ আক্রান্ত এলাকায় ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করার দৃঢ় প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে অবগত করলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।