পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ থেকে ১৬ সালে টেকনাফ কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মানব পাচারকালে দুই হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই সময় একাধিক নৌকা ডুবিতে মারা গেছে প্রায় কয়েক শত মানুষ। তার মধ্যে বেশি পাচারের ঘটনা ঘটছিল টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সাবরাং খুরের মুখ এলাকা দিয়ে। তখন পুলিশের সঙ্গে একাধিক মামলার আসামি “বন্দুকযুদ্ধে” দালাল চক্রের অন্যতম দল নেতা ধলো হোছেনসহ সাতজন নিহত হন এরপর থেকে মানব পাচার তিন বছর বন্ধ ছিল।
টেকনাফ বিজিবি ২ ব্যাটেলিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর শরিফুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, শীতকালে সাগর শান্ত হওয়ায় দালাল চক্র সদস্যরা রোহিঙ্গা পাচারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে । তাই আমরা মাছ ধরার ট্রলার গুলোকে নজরদারিতে রাখছি।
গত ৬ নভেম্বর টেকনাফ উপকূলে মালয়েশিয়া পাচার চেষ্টাকালে ১৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে বিজিবি সদস্যরা। উদ্ধাকৃতরা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা। এর মধ্যে পাচঁজন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছে।
গত ৭ নভেম্বর বিকেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে একটি ট্রলার থেকে মালয়েশিয়া মানবপাচারের চেষ্টাকালে ছয়জন দালাল ও রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৩৩ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১৪ পুরুষ ও ৯ জন শিশু। এরা সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক।
গত ৩০ নভেম্বর সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারকালে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ মাঝার পাড়ার ফজরুল হকের ছেলে দালাল আবদুর রহমানের বাড়ি থেকে ছয় নারীসহ ১০ রোহিঙ্গা আটক করে র্যাব-৭।
গত ৩০ নভেম্বর শাহপরীর দ্বীপ মাঝার পাড়া থেকে উদ্ধার হওয়া তরুণী হাসিনা (১৮) বলেন, মালয়েশিয়ায় এক রোহিঙ্গা যুবকের সাথে মুঠোফোনে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। ওই যুবক শাহপরীর দ্বীপের আবদুর রহমান দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া নিয়ে যাবে বলে মুঠোফোনে জানান। তাই দালাল আবদুর রহমান ট্রলারে তুলে দেওয়া কথা বলে আমাকে শাহ পরীর দ্বীপে নিয়ে আসে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ৩ বছর আগে মানব পাচারের অভিযোগে করা মামলা গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মানব পাচারকারীদের ধরতে ও মানব পাচার ঠেকাতে কাজ করছে পুলিশ। টেকনাফ সীমান্তের ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র উপকূল অরক্ষিত রয়েছে। এটিকে কাজে লাগিয়ে দালাল চক্রের সদস্যরা পাচার করছে রোহিঙ্গাদের। শীর্ষ মানব পাচারকারীদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।