আনোয়ার হোছন -সদর প্রতিনিধি
বাল্য বিবাহ বন্ধ করলেন সদর ইউএনও, মুচলেকা নিলেন মা-বাবা’র।
কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়া এলাকার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্য বিবাহ ঠেকালেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া। ১৩ বছরের শিশু মেয়েটির সম্মতি না নিয়ে লুকিয়ে গোপনে ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছিলেন স্বয়ং জন্মদাতা মা-বাবা। গোপনে খবর পেয়ে সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার গরুর হালদা সড়কে আজ সকালে নিজে হাজির হয়ে বাল্য বিয়েটি পন্ড করলেন ইউএনও।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, শহরের ৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সুর্যের হাসি ক্লিনিক এর রোডে সাহিত্যিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে সহ পাশা-পাশি ঘরে দুটি মেয়ের বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেয়ে কাল বিলম্ব না করে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি।
ঘটনাস্থলে পৌছে জানতে পারেন ইতিমধ্যে একজনের বিয়ে হয়ে গেছে, যারা প্রাপ্ত বয়স্ক। অপর জনের যখন খোঁজ করছিলেন তখন কথিত বরকে বিয়ে পড়ানো কাজীর সহকারীসহ পাওয়া গেলে বরের আইডি চেক করে দেখা যায় বরের বয়স ৩৪ বছর আর মেয়ের আইডি কার্ডে বয়স ১৮ বছর কিন্তু মেয়েকে সামনে উপস্থিত করতে বিলম্ব করছিল মা-বাবা।
প্রায় ১৫ মিনিট পরে মেয়েকে যখন আনলো ততক্ষণে মেয়ের বিয়ের সাজ পরিবর্তন করে সেলোয়ার কামিজ পরিয়ে নিয়ে আসা হয়। তখন মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হয় তুমি কিসে পড়, বয়স কত? উত্তরে বললো ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে এবং বয়স ১৩ বছর সবে পার হয়েছে। তাকে তার বাবা বলেছে একটা স্বাক্ষর দিতে হবে কাগজে। সে আর অন্য কিছু জানেনা। এর পাল্টা প্রশ্ন বাবা ও মাকে করা হলে তারা বলেন- বিয়ে নয়, বিয়ের কথা ফাইনাল করার জন্য ছেলে পক্ষ এসেছে এবং মেয়ের ১৮ বছর হলে তারপর তারা মেয়েকে তুলে দিবে। তাৎক্ষনিক স্কুলের শিক্ষক এবং সমাজসেবা কর্মকর্তাকে উপস্থিত করা হয়। নকল জন্ম নিবন্ধন সহ অন্যান্য পারি-পার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সকলের উপস্থিতিতে মেয়ের বাবা এবং মায়ের মুচলেকা নেয়া হয় এবং কাজী সহ অন্যান্যদের স্বাক্ষর নেয়া হয় ঐ মুচলেকায়।
তখন শিক্ষককে বলা হয় যাতে তিনি নিয়মিত খোঁজ রাখেন ঐ ছাত্রী স্কুলে উপস্থিত হয় কিনা। আর মুচলেকা অমান্য করলে নিয়মিত মামলা করা হবে বলেও জানান ইউএনও।