ঢাকাশুক্রবার , ৬ জুলাই ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘বর্তমান এমপিদের অনেকেই বাদ পড়বেন’

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুলাই ৬, ২০১৮ ২:৪৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

‘বর্তমান এমপিদের অনেকেই বাদ পড়বেন’
নিজস্ব প্রতিবেদক: এলাকায় গিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করুন, যেখানে যতটুকু দূরত্ব আছে তা দ্রুতই ঘুচিয়ে ফেলুন। প্রত্যেক এমপি-মন্ত্রীর জরিপ রিপোর্ট আমার কাছে আছে। জরিপ ও তৃণমূলের মূল্যায়নের মাধ্যমে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

এছাড়া, আগামী নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেভাবেই হোক বিএনপি নির্বাচনে আসবেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাই আগামী নির্বাচন হবে অত্যন্ত কঠিন। সেভাবেই নির্বাচনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের নবম তলায় সরকারি দলের সম্মেলন কক্ষে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এমন বার্তা দেন বলে বৈঠক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজ দলীয় সংসদ সদস্যদের সতর্ক করে বলেন, আমরা ধারণা করছি আগামী অক্টোবরেই নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে। ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য আমাদের নির্বাচনের দ্রুত প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা দ্রুতই দলের নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করবো।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলকও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। যারা এখন সংসদ সদস্য আছেন, তারাই যে মনোনয়ন পাবেন, বিষয়টি তা নয়। অনেকে বাদ পড়বেন। নতুন অনেকে মনোনয়ন পাবেন। আমরা জনপ্রিয়তা দেখে নমিনেশন দেবো। তবে, যাকে নমিনেশন দেবো, তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভোটারদের কাছে সরকারের ৯ বছরের উন্নয়ন-সফলতা ও অগ্রগতিগুলো তুলে ধরার নির্দেশ দেন।

বৈঠকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সংসদের মেয়াদ ৫ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর করার প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু সংবিধান দিয়ে গেছেন, সংসদের মেয়াদ ৫ বছরই থাকবে। এটার পরিবর্তন দরকার নেই।

সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল দল, একটি বিশাল পরিবার। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। এ দলে অনেক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। কিন্তু প্রার্থীতার নামে অনেকেই রয়েছেন যারা নির্বাচনে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেন না, দলের মন্ত্রী-এমপি বিরুদ্ধে কথা বলে দলের দুর্নাম করছেন। এটা সংরক্ষিত নারী আসনেরই হোক কিংবা দলের যে পর্যায়ের নেতাই হোন না কেন, এটা মেনে নেওয়া হবে না। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় খুবই প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কঠোরভাবে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করেছি। শত বাধা অতিক্রম করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। বিচারের রায়ও কার্যকর করেছি। তাই সাহসের সঙ্গে আমরা যারা বিচার কাজ করেছি, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের তো আমরা বিপদে ফেলতে পারি না। তাই জনগণের মন জয় করে আমাদের আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসতেই হবে।

আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে জনগণ যাকে পছন্দ করে ভোট দেবে, সেই নির্বাচিত হবেন। আমরা বিএনপির মতো কোনো মাগুরা মার্কা নির্বাচন হতে দেব না। এই নির্বাচনে পরাজিত হলে সরকার পরিবর্তন হবে না। তাই এসব নির্বাচনে দলের কোনো দুর্নাম যেন না হয়, বিরোধী পক্ষ এ নির্বাচন নিয়ে কোনো ইস্যু তৈরি করতে না পারে।

এ ছাড়াও আগামী ৮ জুলাই জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়াতে আনীত সংবিধান সংশোধন বিল পাশের দিন সবাইকে সংসদে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।

এ ছাড়াও দলের সংরক্ষিত আসনের নারীদের এলাকায় গিয়ে খবরদারি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক নারী সংসদ সদস্য তার নিজের এলাকা বা তার জন্য নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে খবরদারি করেন। এ তথ্য আমার কাছে এসেছে। এ ধরনের খবর আমি আর শুনতে চাই না। কেউ এলাকায় গিয়ে খবরদারি করবেন না।

সংসদীয় দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা পরিচালনা করেন সংসদীয় দলের নূর-ই-আলম চৌধুরী। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট