ঢাকাশনিবার , ১০ জুলাই ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ জানারঘোনা বসতবাড়ীতে হামলা, লুটপাট ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুলাই ১০, ২০২১ ৮:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ জানারঘোনা এলাকায় বসতবাড়ীতে , হামলা, লুটপাট ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রামছাড়া হয়েছে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। হামলার ঘটনায় পক্ষে বিপক্ষে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন।গতকাল ৯ জুলাই রাত ১০ টায় বসত ঘরে অগ্নিসংযোগের এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় আহতরা হল,শফিউল্লাহ নিজে ও তার পুত্র মোঃ আলী ও কন্যা সাদেকা আক্তার। অপরদিকে আহত হয়েছে, আব্দুল্লাহর মা খাতিজা বেগম ও আর একজন সমাজ কমিটির নেতা।

এর আগে ৬ জুলাই রাতে বসতঘরে হামলা লুটপাটের ঘটনা ঘটায় প্রতিক্ষের লোকজন।
ওইদিন রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সদর থানা পুলিশ।
সরেজমিন জানা যায়, ৪ সন্তানের জনক শফিউল্লাহ। তিনি বছর দশেক আগে ৮ শতক পাহাড়ী জমি কিনে দক্ষিণ জানারঘোনা এলাকায় বসবাস শুরু করেন। বসবাসের শুরু থেকেই উভয় পাশের প্রতিবেশীদের সাথে সীমানা বিরোধ লেগেই আছে। গত ৬ জুলাই রাতে সীমানার একটি খুটিকে কেন্দ্র করে তার ছেলে মোহাম্মদ আলীর সাথে প্রতিবেশী আব্দু রশিদের পুত্র আব্দুল্লাহ ‘র কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। ঘটনা কথা কাটাকাটিতে থেমে থাকেনি ঘটনা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। শুরু হয় উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি ইট পাটকেল ছুড়া ছুড়ি ও লোহার রড, ধারারো দাসহ বিভিন্ন লাঠি সোটা নিয়ে মারামারি। ঘটনার এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ তার দলবল নিয়ে শফিউল্লাহর ঘরে ঢুকে চালায় লুটপাট ও ভাঙচুর। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘরের আসবাবসহ নানা জিনিসপত্র। পড়ে থাকতে দেখা যায় ঘরের আলমারিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। ইটের আঘাতে ফুটো হয়ে গেছে টিনের চালা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে সংঘর্ষ থেমে যায়। বিরোধ মিমাংসার জন্য স্থানীয় সমাজ কমিটিকে দায়িত্ব দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পুলিশ। সেইদিন থেকে ওই পরিবারের পুরুষ সদস্যরা গ্রামছাড়া হয়ে বাইরে দিন যাপন করছেন। তাদের অভিযোগ, সমাজে যারা বিচার করবেন, তারাও হামলার ঘটনায় জড়িত। তাই তারা ন্যায় বিচার পাবেন না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে এই ঘটনার সুরাহা হতে না হতে ই গত রাতে শফিউল্লাহর বাড়ীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা অভিযোগ কারী শফিউল্লাহর পরিবার সঠিকভাবে জানাতে পারেনি। তবে অগ্নিকান্ডে ঘরের রান্না ঘরের চালার একটি অংশ পুড়ে গেছে।

আভিযোগকারীর পুত্র মোঃ আলী জানায়, তার প্রতিপক্ষ আব্দুল্লাহ তাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়ীতে হামলা করেছে বলে দাবী তার।
শফিউল্লাহর কলেজ পড়ুয়া কিশোরী কন্যা সাদেকা জানায়, তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ওই রাতের ঘটনা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। তারা যে কোন সময় আমার ইজ্জত নস্ট করতে পারে বলে অশঙ্কা রয়েছে বলে জানায় সে।
শফিউল্লাহর অভিযোগ, তার ভিটে বাড়ী জবর দখল করার জন্য তারা বার বার তার পরিবারের উপর হামলা হচ্ছে। আমাকে ও আমার ছেলেকে তারা হত্যা করতে চায়। আমরা তাদের ভয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছি না। আজ আমরা ৫ দিন ঘরে যেতে পারছিনা। পুলিশ যাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে, তারাও হামলার সাথে জড়িত। আমরা তাদের কাছে ন্যায় বিচার পাবো না।
এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ জানায়, ভিটের সীমানায় একটি খুটিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা। অভিযোগকারীর ছেলে মোঃ আলী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা রোহিঙ্গা পরিবার। তারা আমাদের সাথে সবসময় ঝগড়া বিবাদ করে যাচ্ছে। একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতবড় ঘটনা হতে পারে না। হামলার ঘটনার সাথে তারা কেউ জড়িত নয় বলে দাবী তার। তবে মোঃ আলী আমার বৃদ্ধ মা কে লোহার রড ও দা দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করেছে। আমরা পাল্টাপাল্টি ইট পাটকেল মেরেছি, কিন্তু ঘরে হামলা করিনি। এইসব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।
দঃ জানারঘোনা সমাজ কমিটির সভাপতি আব্দুল কাদের বাবু জানায়, শফিউল্লাহ ও তার ছেলে- মেয়েরা বিভিন্ন অসামাজিক ও বে আইনি কাজে লিপ্ত রয়েছে। তারা সমজের প্রতিবেশীদের সাথে ঝাগড়া ঝাটি করে থাকেন প্রতিনিয়ত। এখানে তার বাড়ীতে হামলা বা অগ্নিসংযোগের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে সেইদিন রাতে পাল্টা পাল্টি ইট-পাটকেল দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।
তবে তার ছেলে মেয়েরা প্রতিবেশী মহিলাকে মেরে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ করছে বলে দাবী তার। এ সমস্যা সমাধানে পুলিশ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে, কিন্তু অভিযোগকারী আমাদের কাছে আসেনি বিধায় সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়নি। এটা সমাধান যোগ্য বিষয়। তারা চাইলে যে কোন সময় বসে সমাধান করতে পারি।

বিষয়টি সমাধানের জন্য সমাজ কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা এএসআই এনামুল। তিনি জানান, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান না হলে থানায় অভিযোগ দিতে হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট