ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া এ রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। বুধবার (২৬ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে ১৫ লাখ ৪ হাজার ৫০৬ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। তারপরও প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন লাখ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ১৩৪টি বাঁধ ভেঙেছে। নোনা জলের কারণে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাছেরও ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ শিবিরগুলোতে ১০ লাখ ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। ১০ কোটি মানুষের চাল ও শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান মমতা ব্যানার্জি। এর আগে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মঙ্গলবার সারারাত তিনি নবান্নেই ছিলেন।
মমতা জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠার পরও এক ব্যক্তি মাছের জন্য জাল ফেলতে গিয়েছিলেন। তিনি পানিতে ডুবে যান।
বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন দুজন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামীকালও দুর্যোগ থাকবে। তাই প্রত্যেককে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে ভারতের ওড়িশার উত্তর উপকূলে আছড়ে পড়ার পরপরই শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ওড়িশায় অন্তত দুজনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কেওনঝড় জেলার পঞ্চপল্লী গ্রামে গাছের নিচে চাপা পড়ে একজন মারা গেছেন। অপরদিকে ময়ূরভঞ্জ জেলার জগন্নাথ খুন্তা গ্রামের একটি পুকুর থেকে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী।
ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওড়িশার উত্তর উপকূলে আছড়ে পড়ে ইয়াস। সেই সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার বেগ কখনো কখনো ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারেও পৌঁছায়। এরপর ক্রমেই শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে ঝড়টি।