ঢাকাশুক্রবার , ১৬ জুলাই ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গল্পঃ~ শ্রীকান্তের কান্ডঃ লেখক- তাপস কুমার বর

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুলাই ১৬, ২০২১ ৯:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গল্পঃ~ শ্রীকান্তের কান্ড
কলমেঃ- তাপস কুমার বর
°°°°°°°° °°°°° °°°°°°°°°

“দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা।
একবার মনের মানুষ ধরতে গেলে,
ছেড়ে যেতে আর দিও না,
দেখেছি…..
দেখেছি,রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা”

……. এই গানটা শুনে কি মনে হচ্ছে? একটা রোমান্টিকতা? না ওই দেবদাস ও রোমিও রোমান্টিকতা। ভাবছেন সকলে তাপস কুমার শরৎ চন্দ্রের ওই “শ্রীকান্ত” হয়ে গেলো নাকি। না না তাপস কুমার যেমন কে তেমনি আছে ! আজকে এই গানটা নিয়ে একটু হাসি মনে এলো ভাবলাম লিখে ফেলি। সকলে কেমন অভিমত জানায় দেখি। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের “শ্রীকান্ত” উপন্যাস নিয়ে একটু হাসির খোরাক উপহার দিলাম সকলকে। তবে নিজের ভাবনায় গড়ে তোলা হয়েছে।আমি নায়ক শ্রীকান্ত। আরো চরিত্র নিয়েছি অমিত লাবণ্য আর শরৎ দাদাকে।শরৎ দা যখন উপন্যাস লেখা শুরু করলো সবে কয়েকটা পাতা লেখা হয়েছে মাত্র। লাবণ্য আর অমিত শরৎ দার কল্পনার ভূত। ওই দুটো দামোদর নদীর তীরে প্রেম কীর্তন করতে গেছে। এদিকে শরৎ দা আমাকে নায়ক করেছে। বলছে নায়িকা কোথায়? আমি বললাম দাদা আমি তো জানি না।দাদা আমার উপর ক্ষেপে গেলেন বললো – “নায়ক হয়েছো নায়িকা কে সামলে রাখতে পারো না। অমিতটা ওকে নিয়ে কোথায় গেছে। আমি বললাম জানি না তো। শরৎ দা রেগে ভোঁ। বেত বের করেছে,আমি বললাম দাদা নায়ক শ্রীকান্ত মারা গেলে উপন্যাসের রঙ তো বদলে যাবে। শরৎ দা বললো হ্যাঁ এই জন্য রক্ষা পেলি।আমাকে শরৎ দাদা আদর করে একশো টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে বললো তাড়াতাড়ি ওদের খুঁজে নিয়ে আয়।এটা শেষ করে অন্য উপন্যাস ধরবো।আমি বললাম তথাস্তু। এখন রৌদ্রে পুড়ে শ্রীকান্ত প্রেম মোহিনী লাবণ্য আর রোমান্টিক অমিত কে খুঁজছি। কি কপাল রে বাপ।শরৎ দার আদেশ পালন তো করতেই হবে না হলে নায়ক চরিত্র ক্যানসিল।অমিত আমার কাছ থেকে 1000 টাকা ধার নিয়ে ছিল। দুজনে আনতাস শাঁড়ি কনটেক্সে নাম দিয়ে হেরে ভোঁ কাট্টা হয়েছে।ভুল গাইলে তো হারতে হবে…
রোমান্টিক অমিত প্রতিযোগিতা এসেছে,না হচ্ছে পূরনের জন্য এসেছে সেটা বোঝা কঠিন।হেঁড়ে গলায় অমিত গান গাইছে…..
“দেখেছি রূপ সাগরে রূপের সাগর, লাবণ্যকে।
তোকে ধরতে গেলে কোথায় তুই যাসরে চলে”।

আনতাস শাড়ি কনটেক্সে কুঁড়িটা প্রশ্ন থেকে অনেক কষ্টে 10 নম্বর জোগায় করেছিল।ভুল গান গাওয়ার অপরাধে (-10 )করে দিয়েছে বিচারক মহল।
অমিত আর লাবণ্যকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বেশ কিছু দিন। শেষ পর্যন্ত আমি বাঙালি ডিটেকটিভ ফেলুদার কাছে গেলাম। দেখা হতে ফেলুদা বললো…..

ফেলুদা~ কি রে শ্রীকান্ত কেমন আছিস?
শ্রীকান্ত~ ফেলুদা আর বলো না! শরৎ দার ঝাঁকুনি খেতে হচ্ছে। অমিত ও লাবণ্যকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমিত লাবণ্য না থাকলে উপন্যাসটা জমবে না দাদা। তোমার সহযোগিতা চাই।
ফেলুদা~ এ তো জটিল রহস্য রে শ্রীকান্ত। অনেক গুলো ঝামেলা নিয়ে বসে আছি। ব্যোমকেশ কে ফোন লাগাই কি বলে দেখি।না হলে ওকে দিয়ে সমাধান করিয়ে দেবো।
শ্রীকান্ত~ ফেলুদা একটা কথা জিঞ্জাসা করি?
ফেলুদা~ বল।
শ্রীকান্ত~ তুমি আর ব্যোমকেশ দাদা একই কাজ করেন তো আপনাদের কাজের কোন সমস্যা হয়না।
ফেলুদা~ আমি সত্যজিৎ এর ফেলুদা ও শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ দুজনের চিন্তা ভাবনা আলাদা।
শ্রীকান্ত~ ও আচ্ছা।
ফেলুদা~ তোকে এ বিষয় নিয়ে রাতে জানাবো।
শ্রীকান্ত- আচ্ছা ফেলুদাদা আসি।
আমি ভাবলাম ফেলুদাদা ও ব্যোমকেশ দাদা নিশ্চয়ই কোন একটা সমাধান করে দেবে।কত বড়ো ডিটেকটিভ ওরা। রাতে ফোন করে ফেলুদা বললো শ্রীকান্ত আমি এখন একটা কেশ নিয়ে পড়েছি “গ্যাঙ্ক টকে গন্ডগোল” এর সমধান করে দিতে হবে। তাই আমি এখন তোর দায়িত্ব টা নিতে পারবো না। এ দিকে আবার ব্যোমকেশ দাদা বললো আমার প্রচুর চাপ আছে ভাই পাঁচটা কেশ নিয়ে পড়েছি। কি আর করা যায় তাহলে কি অমিত আর লাবণ্যকে খুঁজে পাবো না। না একটা উপায় আছে শার্লক হোমস কে বলে দেখি। বিদেশি ডিটেকটিভ কি বলে দেখি। ফোন করতে শার্লক হোমস স্যার বললেন…..
Srikanth~ Hello I am Srikanth sir.
Sherlock Holmes~ Tell me what you can solve.
Srikanth~ Sir, I can’t find my friend Amit, and Lavanya with him.
Sherlock~ And this thing, did you find his house?
Srikanth~ Yes, not at home.
Sherlock~ Now I’m very busy reading “The Hound of the Bascarvel”. Good night!
যা শার্লক হোমস স্যার কে ও পেলাম না।
শরৎ দার কাছে গেলে রক্ষে থাকবে না।মাথায় হাজার চিন্তা কি করে উপন্যাস টা শেষ হবে।আনমনা হয়ে হন্তদন্ত করে দামোদর নদীর তীরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। কাছে আসতে দেখি যাদের খুঁজছি এতোদিন ধরে,সেই শ্রীকান্ত এখন ওদের খুঁজে খুঁজে লালন ফকির হয়ে গেছে। রোমান্টিক দৃশ্য দেখাচ্ছি তোদের” রোমান্টিক দৃশ্য লক্ষ করলাম” অমিত বাবু গান ধরেছে কিশোর কুমারের…..
“তারে আমি চোখে দেখিনি তার অনেক গল্প শুনেছি।
গল্প শুনে তারে আমি অল্প অল্প ভালোবেসেছি।”
… আমি এখানে উপন্যাস শেষ করবো উঠে পড়ে লেগেছি “এদিকে রোমান্টিক গান চলছে, গান গাওয়াচ্ছি।
কথোপকথনঃ-

শ্রীকান্ত- (চিৎকার করে) এই অমিত।
অমিত- (হুমড়ি তুবড়ি খেয়ে) কে কে?
শ্রীকান্ত- চিনতে পারছিস না, 1000 টাকা ধার নিলি, এদিকে শরৎ দা আমাকে বকেই চলেছে অমিত লাবণ্যকে যেমন করে হোক আমার কাছে হাজির করতেই হবে না হলে উপন্যাস বন্ধ থাকবে।
অমিত~ তারে ভাই শরৎ দাদা কি এতো ব্যস্ত। অনেক দিন পর লাবণ্যকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছি একটু তো সময় লাগবে ভাই।
শ্রীকান্ত~ আমি ভাই নয়। আমি নায়ক শ্রীকান্ত।
অমিত~ কিছুই তো হলো না, শুধু টাকা খরচ হলো। তোর পুরো 1000 টাকা শেষ।
শ্রীকান্ত~( রেগে গিয়ে) আগামী কাল টাকাটা চাই।
অমিত~ কি করে দেবো? উপন্যাস ও বন্ধ হয়ে আছে তার সাথে শরৎ দা যেভাবে রেগে আছে।
শ্রীকান্ত~ কি করে খরচ হলো টাকা?
অমিত~ আমি ভাবলাম যমুনার তীরে আমি আর লাবণ্য ঘুরতে গিয়ে,ওকে একটু ইমপ্রেস করবো। তবে ভাই আমি তো বাঁশি বাজাতে পারিনা, একজন বাঁশি বাদককে ধরে নিয়ে এলাম। উনি 500 টাকা ছাড়া বাঁশি বাজাবে না। আমাকে গচ্ছা একটা 500 টাকা দিতে হলো। আমি গাছের তলায় কৃষ্ণ সেজে বসে আছি রাধিকা কখন আসবে? তাতে কি রোমান্টিক জাগে? ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে গেলো রাধিকার দেখা নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট