ঢাকাসোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুরুশকুলে বনায়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি, নেপথ্য রেঞ্জার ফারুক বাবুল।

প্রতিবেদক
আনোয়ার হোছন

সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪ ১:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খুরুশকুলে বনায়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি, নেপথ্য রেঞ্জার ফারুক বাবুল।

(আনোয়ার হোছন)

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে জলবায়ু উধবাস্তদের জন্য নির্মিত বিশেষ আশ্রয় প্রকল্পে বনায়নের নামে লক্ষ লক্ষ সরকারি টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত পিএম খালী রেঞ্জ অফিসার মো: ফারুক বাবুলের বিরুদ্ধে। চুক্তির বাহিরে বিভিন্ন নিম্ন মানের গাছের চারা রুপন করে ও বিভিন্ন ভূয়া বিল উপস্থাপন করে ইতিমধ্যে আত্যসাৎ করা হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এই দূর্নীতিগ্রস্থ রেঞ্জারের বিরুদ্ধে কথা বলার মত যেন কেউ নেই কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগে।

জানা যায়, সদরের খুরুশকুলে জলবায়ু উধবাস্তদের জন্য বিশেষ আশ্রয় প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয় বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে।
এ প্রকল্পটি ২০২০সালের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর থেকে শুরু হয় কার্যক্রম। এই প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে ১৩৯টি পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রী টাওয়ার নামীয় ১০তলা ভবন, মমসজিদ, মন্দির, স্কুল, শুটকি মহাল, বেড়িবাঁধ অন্যতম।
বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্পটিকে জেলা শহরের সাথে সংযুক্ত করতে ২শ কোটি টাকা ব‍্যায়ে কস্তুরা ঘাটে নির্মাণ করা হয়েছে বাকঁখালী সেতু। বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বসবাসের উপযোগী করতে বনায়নের দায়িত্ব পান কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ। যাতে বনায়নের মেয়াদ উল্লেখ করা হয় ৩৬ মাস এবং বনায়ন প্রকল্পের ব্যায় ধরা হয় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ ঐ বনায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে চুক্তিপত্র মোতাবেক বিভিন্ন প্রকার গাছের চারা রুপনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় পিএম খালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: ফারুক বাবুলের উপর। রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: ফারুক বাবুল গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে চারা রুপনের কাজ শুরু করেন। যা এখনো চলমান আছে। এই বনায়নে ক্রিসমাস ট্রি, পান্থপাদক, বিলাতি গাব, নারিকেল, সুপারি, দেবদারু ইত্যাদি দামি দামি গাছের চারা রুপনের কথা উল্লেখ থাকলেও গত বছর রুপন করা হয় আম, জাম, নিম, কাট বাদাম, নারিকেল, সুপারি, লেবু ইত্যাদি নিম্ন মানের চারা। যার অধিকাংশ গাছ বর্তমানে অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে অধিকাংশ নারিকেল গাছের চারা রুপন করা হলেও এতে দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত সার। এতে দেওয়া হচ্ছে শুধু পাহাড়ী মাঠি ও গোবর। এসব চারা পাহারা দেয়ার জন্য ৩ জন ওয়াচার (মাসে ১২ হাজার টাকা করে) নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও পাওয়া যায় ১ জন ওয়াচার। ইতিমধ্যে রেঞ্জার মো: ফারুক বাবুল ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে শুধুমাত্র আবাসিক এলাকায় বনায়নের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির রুপনকৃত চারার পাহারাদার নিয়োগ, শ্রমিক নিয়োগ, বনায়নের জন্য বিভিন্ন মালামাল ক্রয়, চারা ক্রয় ও বিভিন্ন আনুসাঙ্গিক ব্যায়ের কথা উল্লেখ করে গত বছরের ১১ এপ্রিল ৪টি ভূতুড়ে বিল উপস্থাপন করেন। এসব ভূতুড়ে বিলে সর্বমোট প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। যা বাস্তবতার সাথে আকাশচুম্বী গড়মিল। যাতে এক বান্ডেল ৮০ গ্রাম এ-ফোর অফসেট পেপারের দাম উল্লেখ করা হয়েছে ৬০০ টাকা। এভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বনায়ন প্রকল্প থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আত্যসাৎ করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: ফারুক বাবুল।

এবিষয়ে জানার জন্য পিএম খালীর রেঞ্জার মোঃ ফারুক বাবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজ করছি। এখানে কোন ধরনের দূর্নীতি হয়নি। দাখিলকৃত ভূতুড়ে বিলের কথা উল্লেখ করা হলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে দেখা করবেন বলেন এবং এক পর্যায়ে অফিসে চা’র দাওয়াত দেন।

চুক্তিপত্রের বাহিরে নিম্নমানের চারা রুপন, চারা রুপন ও পাহারাদার নিয়োগে অনিয়ম, ভূতুড়ে বিল উপস্থাপনের বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ডিএফও মো: আনোয়ার হোসেন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দায়িত্ব প্রাপ্ত রেঞ্জারের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করতে বলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com