ঢাকামঙ্গলবার , ১৭ আগস্ট ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কক্সবাজারে পর্যটন খুলে দেওয়ার আগে সাগরে মানুষের ভিড়

প্রতিবেদক
সিএনএ

আগস্ট ১৭, ২০২১ ৮:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আগামী ১৯ আগস্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু তার আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন হাজারো পর্যটক। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না পর্যটকরা। স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের সৈকত থেকে সরিয়ে দিলেও নানা অজুহাতে নামছেন।

পর্যটকরা বলছেন, অনেকদিন ধরে করোনায় ঘরবন্দি থেকে মুক্তি পেতে সৈকতে ভ্রমণে এসেছেন। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে নেমেছেন তারা।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ও সব বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। চলতি বছরের ১ এপ্রিলের পর থেকে সংক্রমণরোধে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নামতে দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। একইভাবে সব বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর থেকে সৈকত ও বিনোদন কেন্দ্রে ভ্রমণ থেকে বিরত ছিলেন পর্যটকরা। কিন্তু ১৯ আগস্ট পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার কথা শুনে আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন হাজারো পর্যটক। পর্যটকদের সৈকতে নামতে স্থানীয় প্রশাসন নিষেধ করলেও তা মানছেন না। কেউ ঘোড়ায় চড়ে আবার কেউ সৈকতে গোসল করে উল্লাসে মেতেছেন।

পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার কথা শুনে আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা
পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার কথা শুনে আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি নীলিমা আকতার ও মো. সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার বিষয়টি আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিলাম। মনে হয় না কোনও সমস্যা হবে। আমরা তো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সৈকতে বেড়াতে এসেছি। কতদিন বাসায় বন্দি সময় কাটাবো?।’

স্থানীয় পর্যটক মিনহাজ আলম বলেন, ‘সৈকতে আসা পর্যটকদের মুখে মাস্ক নেই। বিধিনিষেধ না মানলে কক্সবাজারে করোনার অবস্থা ভয়াবহ হবে। প্রশাসনকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।’

মিনারুল রাবেয়া বলেন, ‘পর্যটন না খোলার কারণে এখন লোকজন কম। ১৯ আগস্টের পর থেকে পর্যটক বেড়ে যাবে। তাই আগেই এসেছি। আশা করছি, করোনায় কোনও সমস্যা হবে না।’

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ সড়ক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান বলেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার আগেই পর্যটকরা কক্সবাজারে আসছেন। আমরা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেলে অবস্থানের সুযোগ দিচ্ছি।’

সি ওয়েলকাম রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদরুল হাসান মিলকী বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে অসল সময় কাটছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। তবে এই দুঃসময়ে কিছু পর্যটক সৈকত ভ্রমণে এসেছেন। বিশেষ করে ১১ আগস্ট লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে পর্যটকরা সৈকতে আসতে শুরু করেছেন। আশা করছি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা সমুদ্রসৈকতে ঘুরে বেড়াবেন।’

১৯ আগস্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা
১৯ আগস্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ‘জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে এবং পর্যটন শিল্পকে অগ্রসর করতে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে পুনরায় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

জানতে চাইলে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘করোনার এই দুঃসময়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আমরা আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট মালিকদের পরিষ্কার বলে দিয়েছি, স্বাস্থ্যবিধি না মাললে বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য হবো। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে করোনা সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’

আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্রে ৫০ শতাংশ আসন ব্যবহার করতে বলা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট