জোর যার মুল্লুক তার— কক্সবাজারের বাঁকখালী ৬ নং লঞ্চঘাট ও নুনিয়াছড়া লঞ্চঘাট যেন এ নীতিতেই চলছে। কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যাওয়ার ঘাট বাঁকখালীতে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছে একটি গোষ্ঠী। অনেকটা বাধ্য হয়েই সাধারণ জনগণ প্রতিবাদ না করে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। আমজনতাকে বাধ্য করার কারণেই দ্বিগুণ টাকা দিচ্ছেন তারা, যদিও এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই সাধারণের মাঝে। আবার প্রতিবাদ করারও সাহস পান না কেউ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মহেশখালীর নুনিয়াছড়া লঞ্চঘাটে পৌঁছতে কক্সবাজারের বাঁকখালী ৬ নং লঞ্চঘাটে প্রবেশ ফি ১০ টাকা নির্ধারিত হলেও আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা। ২০ টাকা হারে টাকা আদায়ের রসিদও আলাদা করে বানানো হয়েছে। ১০ টাকার রসিদ দেখতে চাইলেও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন টাকা আদায়কারী। প্রশ্ন করতেই তার উত্তর, ‘আপনি এখান থেকে মহেশখালী গেলে ২০ টাকা দিতে হবে। এতে আপনাকে ফিরে আসার সময় কোনো ফি দিতে হবে না।’
যদিও কক্সবাজার ফিরে আসতে সড়কপথে চকরিয়া হয়ে সহজপথ রয়েছে। লঞ্চঘাটে ফিরে না এলে কী হবে, কেন ১০ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘ঘাটে প্রবেশ করলে এটা দিতে হবে; না হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। আপনি ফিরে যান কক্সবাজার, এ ঘাটে আসার প্রয়োজন নেই, কেন এসেছেন…?’ সেজন্য সরল মনে টাকা দিয়ে চলে যেতে হয় জনসাধারণকে।
বঙ্গোপসাগরের মোহনা দিয়ে সমুদ্রপথে কক্সবাজারের বাঁকখালী ৬ নং লঞ্চঘাট থেকে রওনা হয়ে নুনিয়াছড়া লঞ্চঘাটে উঠে মহেশখালী পা রাখা যায়। অনেক পর্যটক সড়কপথের পরিবর্তে সমুদ্রপথে স্পিডবোট কিংবা ফিশিং নৌকা নিয়ে যান। মহেশখালীর অধিকাংশ অধিবাসীর ভরসা এ ঘাট।
এ ঘাটের ফেরি ব্যবসায়ী সবুজ (ছদ্মনাম) বলেন, ‘ঘাটে কেউ কথা বলতে পারেন না। এখানে অনেকের পাহারা থাকে, আপনি চাইলেই প্রবেশ করতে পারবেন না। অনেক সময় লাঞ্ছিত হতে হয় অনেককে। সেজন্য সাধারণ লোকজন কথা না বাড়িয়ে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য হন।’
ঘাটের ফি আদায়ে নিয়োজিত হাসান নামে একজন বলেন, ‘আমাদের ঘাটের ফি একবারই নেয়া হয়। আপনি চকরিয়া দিয়ে গেলেও এটা দিতে হবে।’
ঘাটের ইজারাদার কারা, কেন নিয়ম ভেঙে বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে- এমনটি জানতে চাইলেও উত্তর দিতে রাজি হননি হাসান।