এশিয়ায় সবচেয়ে প্রবীণ বা মুরব্বি নেতা এখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। এ তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।
উল্লেখ্য, সদ্য অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয় ড. মাহাথিরের জোট। এর ফলে ৯২ বছর বয়সে তিনি আবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তার সমান বয়সী আর কোনো রাষ্ট্রপ্রধান এখন বিশ্বে আর নেই। ফলে তিনিই সবচেয়ে প্রবীণ রাষ্ট্রপ্রধান।
অন্যদিকে বয়সের হিসাবে চতুর্থ সিনিয়র রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বয়স এখন ৭০ বছর। ফলে তিনি এ তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। বিরোধী রাজনীতিকরা এবারে মালয়েশিয়ার নির্বাচনে মাহাথিরের বয়স বিবেচনায় তার বিরোধিতা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে যুৎসই নন। তবু মালয়েশিয়ানরা তাকেই বেছে নিয়েছেন। ৯২ বছর বয়সে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়সী রাষ্ট্রপ্রধান হলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে তিনি ২১ বছরের বড়। আর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বয়সের দ্বিগুন বয়সী। ডাটা লিডস’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য ডেইলি স্টার। এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে তার পিতার রাজনৈতিক উত্তরসূরি। তিনি দুটি সামরিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করে এখনও টিকে আছেন। টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির অন্যতম ছিলেন তিনি।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঠাঁই দেয়ার জন্য তিনি যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন করার কারণে দেশের ভিতরে সমালোচিত হয়েছেন। ওদিকে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের বয়স ৭৩ বছর। তার দেশে তিনি সবচেয়ে সমালোচিত। অকূটনৈতিক সুলভ বক্তব্য ও মাদকের বিরুদ্ধে তিনি যে লড়াই করছেন সে কারণে তীব্র সমালোচিত হয়েছেন। লাওসে প্রধানমন্ত্রী থেংলোন সিসোলিথের বয়স ৭২ বছর। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ক্ষমতায় আছেন।
লাওসের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে কম বয়সী মন্ত্রী ছিলেন রনিল বিক্রমেসিংহে। ৬৯ বছর বয়সে এসে তিনি দেশটির দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বজুড়ে দৃষ্টি আকৃষ্ট করেছেন। সেখানে এ পর্যন্ত যত রাজনৈতিক নেতা বিখ্যাত হয়েছেন তার মধ্যে তাকে অন্যতম হিসেবে ধরা হয়। যদিও সেখানে তার অধীনে সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘন বাড়ছে। তার জনপ্রিয়তা দৃশ্যত যা-ই হোক কিন্তু কমছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপ্রধানদের সবার বয়স ৬৬ বছর করে। কম্বোডিয়ার হুন সেন ক্ষমতায় আসেন ১৯৮৫ সালে। তার বয়স এখন ৬৫ বছর। তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা হয়। তিনি খেমাররুজ ঘটনায় বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে দেশকে টেনে তুলেছেন।
তবে তাকে দেখা হয় অত্যন্ত স্বৈরশাসক হিসেবে। তার দেশে রয়েছে অত্যন্ত নাজুক মানবাধিকারের রেকর্ড। চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সি জিনপিংয়ের বয়স ৬৪ বছর। সংবিধান তাকে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালীদের অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমন সম্মান মাও সেতুংয়ের পর আর কাউকে দেয়া হয় নি।