ঢাকামঙ্গলবার , ৩১ জুলাই ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বর্জন-অভিযোগের নির্বাচন

প্রতিবেদক
সিএনএ

জুলাই ৩১, ২০১৮ ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 আমাদের সময়: নানা অভিযোগ ও বিএনপিসহ কয়েকটি দলের মেয়রপ্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার হয়ে গেল তিন সিটি করপোরেশনের ভোট। রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, জালভোটসহ কারচুপি ও অনিয়মের ঘটনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে বেসরকারি ফলে রাজশাহী ও বরিশালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাদিক আব্দুল্লাহ। আর সিলেটে জয়ের পথে বিএনপির প্রার্থী আরিফুর রহমান।তিন সিটি নির্বাচনে ৩৯৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টির ভোট বা ফল অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে স্থগিত করা হয়েছে। যদিও এটিকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ উল্লেখ করে ভোট নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘কিছু অনিয়ম ছাড়া তিন সিটিতেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে কিছু অভিযোগ শুনেছি। আমরা কেবল নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যকে ধরতে পারি। সে হিসেবে ১৫টি কেন্দ্রে অনিয়মের তথ্য এসেছে। এসব কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে।’ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বলেছে, নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ। ভোট উৎসব হয়েছে। অন্যদিকে ভোট শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি জানায়, ক্ষমতাসীনদের ‘ভোট ডাকাতির নগ্ন বহির্প্রকাশ’ ঘটেছে। গাজীপুর ও খুলনায় অল্পকিছু লোক ভোট দিতে পারলেও এবার সেটিও সম্ভব হয়নি। রাতে নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকও করেছেন। আজ সকালে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে দলটি। তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়- খুলনা ও গাজীপুরের চেয়েও বেশি প্রহসন হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।রাজশাহী : গণনা শেষে রাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ১৩৮ কেন্দ্রের সব কটির ফলই বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। এতে আওয়ামী লীগপ্রার্থী লিটন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ধানের শীষে পান ৭৮ হাজার ৪৯২ ভোট। তবে নিজেদের পোলিং এজেন্ট ও ভোটদানে বাধা, ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ধানের শীষের নির্বাচনী ক্যাম্প করতে না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ তোলে বিএনপি। এমনকি নিজের ভোট না দিয়ে সেই অনিয়মের প্রতিবাদে সাড়ে চার ঘণ্টা একটি কেন্দ্রে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মেয়রপ্রার্থী বুলবুল।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আমাদের সময়কে বলেন, ‘যেখানে গণতন্ত্র বিপন্ন, মানুষের ভোটের কোনো মূল্য নেই, সেখানে আমার ভোট দিয়ে কী লাভ? এ জন্য প্রতিক্রিয়াস্বরূপ আমার নিজের ভোটটি আমি দেইনি।’এদিকে নানা অভিযোগ এনে বেলা ৩টার দিকে ভোট বর্জন করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) মেয়রপ্রার্থী মো. শফিকুল ইসলামও। তিনি বলেন, ‘এটিকে আসলে নির্বাচন বলা যায় না। এটি রীতিমতো নাটক এবং প্রহসন। যার কারণে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছি।’গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় মহানগরীর তালাইমারী দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে অন্যান্য প্রার্থীর পোলিং এজেন্টরা প্রবেশ করতে পারলেও ধানের শীষের এজেন্টদের বাধা দেয় ২০ থেকে ৩০ যুবক। সকাল ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল আরেক চিত্র। ভোটারদের কোনো লাইন নেই। কেউ ভোট দিতে এলেই প্রবেশমুখে বলে দেওয়া হচ্ছে, মার্কা কিন্তু নৌকা।ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল ভবনের বাইরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী অবস্থান করছে। অপরদিকে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরে কিছু নারী-পুরুষ বলে দিচ্ছেন- কে কোথায় ভোট দিবেন।এই কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন একটি জায়গায় এ ধরনের ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানও ভোট দিতে গিয়ে না দিয়েই ফেরত যান বলে জানান ড. আমজাদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে এ কথা স্যার (মোস্তাফিজুর রহমান) নিজেই বলেছেন।’বিষয়টি জানতে গেলে দেখা যায়, প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। তাকে পাশ কাটিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার দেব দুলাল ঢালির কাছে গেলে তিনি কোনো কথা না বলে উল্টো উত্তেজিতভাবে এ প্রতিবেদককে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।নামোভদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজশাহী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সইজুদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাতীয় তরুণ সংঘ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহ মখদুম কলেজ, সরকারি পিএন গার্লস হাইস্কুল, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, হ্যালেনাবাদসহ ২০টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশমুখে নৌকার ব্যাজধারীরা আশপাশে অবস্থান নিয়ে পাহারা বসিয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কোথাও ধানের শীষের নির্বাচনী ক্যাম্প, ব্যানার বা পোস্টার দেখা যায়নি। এমনকি ধানের শীষের ব্যাজ পরা কোনো লোককেও চোখে পড়েনি।এদিকে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর লিটন বলেন, ‘আজকে অনেক দিন পরে নগরবাসী একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা উন্নয়নের পক্ষে, নৌকার পক্ষে এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে তাদের রায় দিয়েছে।’ জয় পেলেও শান্ত থাকার জন্য সমর্থকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পহেলা আগস্ট পরশু। এ দিনটিতে শোকের মাস শুরু হবে, সে কারণে আমরা কোনো বিজয় মিছিল করব না। তা সবাই মনে রাখবেন।’বরিশাল : সিটি করপোরেশনটির ১২৩ কেন্দ্রের মধ্যে এ পর্যন্ত ঘোষিত ১০৭টিতে আওয়ামী লীগের সাদিক আব্দুল্লাহ পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৮০৩ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার ১৩ হাজার ৪১ ভোট পেয়েছেন। যদিও বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫টি কেন্দ্রের ফল এবং একটির ভোট স্থগিত করা হয়েছে। বাতিল কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩১ হাজার ২৮৭ জন।এদিকে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের পাশাপাশি স্থগিতের দাবি জানান বিএনপিসহ চার মেয়রপ্রার্থী। দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোট শুরু না হতেই ব্যালটে নৌকার সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। ৭০ থেকে ৮০টি কেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্টদের ঢুকতেই দেওয়া হয়নি।কারচুপির অভিযোগ এনে সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রেখে নতুন করে ভোট নেওয়ার দাবি জানান বাসদের মেয়রপ্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তীও। দুপুর ১২টার দিকে নগরীর সদর রোডে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সকাল ৮টার আগেই নৌকা মার্কায় সব সিল দেওয়া হয়ে গেছে। প্রতিবাদ করায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে আমার এলাকায় আমার ওপর হামলাও চালানো হয়। অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। এটা নির্বাচনের পর্যায়ে পড়ে না। এটা প্রহসনের নির্বাচন। এ নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।’ প্রায় একই সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহাবুব ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে তা স্থগিত করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানান জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেনও। পরে বিএনপি, বাসদ, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা এ দাবিতে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে যান। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান জানান, প্রার্থীদের অভিযোগগুলো নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।এদিকে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে খুশি নগরবাসী। সিটির ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়। এসব কেন্দ্রে ধানের শীষের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি ভোট পেয়েছে নৌকা।সিলেট : আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে প্রকাশিত ১৩৪ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টিতে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছেন। সেই হিসাবে আরিফ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তবে এগিয়ে থেকেও অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে তাকে। কেননা দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রয়েছে। এতে মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৮৭। আর বিজয় নিশ্চিত করার জন্য আরিফের আরও ১৬১টি ভোট প্রয়োজন।এ বিষয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান জানান, যেহেতু আরিফ ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে আছেন এবং এর মধ্যে ১৬১ ভোট পেলেই তিনি বিজয়ী হবেন, তাই স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।এদিকে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ভোটের ফল স্থগিতের আবেদন জানিয়েছেন। ১২৩টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণাকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর তিনি এ আবেদন করেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের এজেন্টদের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলে ১০ থেকে ১৫ হাজার ভোটের ব্যবধান রয়েছে। এতে করে নির্বাচনের ফল না ঘোষণা করে পুনর্গণনার আবেদন করা হয়।অবশ্য ভোটের সময় আরিফুল হক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীও বেশকিছু অভিযোগ আনেন। তিনি জানান, ৪১টি কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে জালভোট দেওয়া হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে নগরের রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ হয়।এর পর পরই সেখানে একদল যুবক ঢুকে একটি বুথ দখলের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। বিষয়টি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘রামদা ও লাঠিসোটা নিয়ে কয়েকজন যুবক কেন্দ্র ঘিরে আছে।’ এর পর তিনি নিজেই সেখানে জড়ো হওয়া যুবকদের দিকে এগিয়ে যান। পরে যুবকরা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায়।এক সময় নির্বাচনের ফল আগাম প্রত্যাখ্যান করেন আরিফুল হক। ভোটগ্রহণ শেষে তিনি সিলেট শহরে বিএনপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফল যাই হোক, সন্ত্রাসী ভোট প্রত্যাখ্যান করলাম। এটা ভোট চুরি নয়, দিনেদুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে ভোট ডাকাতি হয়েছে।’ আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই জয়, জয় না। এটা মীরজাফরের জয়। এ জয়ের মাধ্যমে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com