জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। টানা ভারী বর্ষণের ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। ইতোমধ্যে পাহাড়ধসের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা।
এ নিয়ে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম সংবাদকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির আশঙ্কা করে অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকিদের তেমন কোন ঝুঁকি না থাকায় আপাতত অন্যত্রে সরানোর পরিকল্পনা নেই। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে বাকিদের মধ্য থেকে ঝুঁকিপূর্ণদের সরিয়ে নেয়া হবে। এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন দাতা সংস্থাসহ সরকার কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন শরণার্থী কমিশনার।
গত বছরের ২৫ আগস্টের পর উখিয়া ও টেকনাফের ৫ হাজার একর বনভূমি দখল করে পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নিয়েছে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৭ লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে বসবাসকারী আরও ৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাসহ ১২ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস এখন উখিয়া-টেকনাফে। টানা বৃষ্টির কারণে বিশেষ করে নতুন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়।
সম্প্রতি টানা ভারী বর্ষণের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অধিকাংশ পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় গত ৫ দিনে প্রায় অর্ধশত ছোট-বড় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৫ শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারা গেছে এক শিশুসহ ২ জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা। চলতি বর্ষায় ৩৭২টি ছোট বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এর মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রায় ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। খাদ্য-পানীয় সরবরাহের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা। এছাড়া দুর্যোগে ক্ষতি কমাতে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে শেল্টার উপকরণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ধারণা পেতে চালু করা হচ্ছে ছয়টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।