ঢাকারবিবার , ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উখিয়ার হাটবাজার অস্তিত্ব সংকটে

প্রতিবেদক
সিএনএ

সেপ্টেম্বর ২, ২০১৮ ৬:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে উখিয়ার ছোটবড় ৮ টি হাটবাজার অস্থিত্ব সংকটে রয়েছে। যার কারনে লোকসানের বোঝা দিন দিন ভারী হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
কক্সবাজারের উখিয়ার ২০টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ছোটবড় প্রায় অর্ধশতাধিক হাটবাজারে সকাল সন্ধা নিয়মিত নিত্যপণ্যের বাজার গড়ে উঠায় ছোটবড় মাঝারি ব্যবসায়ীরা এখন ক্যাম্প মুখী হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তরি-তরকারি শাকসবজি বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাজারে।
বাজার ইজারাদারদের অভিযোগ, ক্যাম্পে অবৈধভাবে হাটবাজার গড়ে উঠার কারনে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলে আয়ের উৎস সৃষ্টি করায় অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে উখিয়ার ইজারা প্রাপ্ত হাটবাজারগুলো। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ক্যাম্প ভিত্তিক হাটবাজার বানিজ্যে বন্ধ করা না হলে আগামীতে স্থানীয় হাটবাজার গুলোর নিলাম ডাক অনেকাংশে হ্রাস পেতে পারে। এতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
উখিয়া বাজারের মুদির দোকানদার নুরুল ইসলাম, কাপড় ব্যবসায়ী শামশুল আলম, কাচা তরকারি ব্যবসায়ী আলমসহ বিভিন্ন রকমারী পণ্যের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, তারা যুগযুগ ধরে গ্রামীন ঐতিহ্য সরকারি ইজারার আওতাধীন হাটবাজার গুলোতে স্থায়ীভাবে ব্যবসা করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে এসব হাটবাজারে ক্রেতা বিক্রেতা আনা গোনা কমে যাওয়ার কারনে তাদের বাপ-দাদার পেশা বিলুপ্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তারা আরও বলেন, স্থানীয়রা ছাড়া এ বাজারে খুব কম ক্রেতার সমাগম ঘটে। প্রতি শনিবার মঙ্গলবার এ বাজারে কোটি কোটি টাকার পন্য সামগ্রীর লেনদেন হয়ে আসলেও রোহিঙ্গা আসার পর থেকে সেই লেনদেন আর নেই।
বাজার ইজারাদার মামুন চৌধুরী সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক প্রায় অর্ধশতাধিক হাটবাজার গড়ে উঠেছে। এসব বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের অধিকাংশ রোহিঙ্গা। স্থানীয় হাটবাজার থেকে অনেক ব্যবসায়ী ক্যাম্পের বাজারে চলে যাওয়ার কারনে আগের তুলনায় ঠোল আদায় হচ্ছে না। তিনি জানায় এ অবস্থা অপরবর্তিত থাকলে বাজার ডাকের ইজারার অর্ধেক টাকাও তোলা সম্ভব হবে না।
উখিয়া থাইংখালী বাজার ইজারাদার দানু মিয়া জানান, থাইংখালী ষ্টেশনে আদায়কৃত ঠোলের টাকা দিয়ে স্কুলের বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হতো। বর্তমানে বাজারটি রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার কারনে ঠোল আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে কোটবাজার, উখিয়া সদর, ভালুকিয়া, সোনারপাড়া, মরিচ্চ্যাসহ প্রতিটি বাজারে রোহিঙ্গাদের প্রভাব পড়েছে বলে ইজারাদারদের অভিযোগ।
এদিকে কুতুপালং মধুরছড়া, লম্বাশিয়া, থাইংখালীর হাকিম পাড়া, ময়নারঘোনা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি অলিগলিতে জমজমাট রোহিঙ্গা বাজার। এসব বাজারে মিলে না এমন কোন পন্য নেই। বাজার ইজারাদারদের অভিযোগ, রোহিঙ্গারা সরকারি বেসরকারি ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা প্রদত্ত ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার পরেও তাদেরকে ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ায় স্থানীয় হাটবাজার গুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি সড়কে যানজট বেড়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে ইউএনও নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, সড়কের উপর যাতে হাটবাজার বসতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com